দিল্লি, 22 অগাস্ট : বড়সড় নাশকতার ছক রাজধানীতে? স্বাধীনতা দিবসের এক সপ্তাহর মধ্যেই ISIS জঙ্গী আবু ইউসুফের গ্রেপ্তারি, পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াই, বিস্ফোরক উদ্ধার, আরও কয়েকজন জঙ্গি লুকিয়ে থাকার আশঙ্কায় এই সম্ভাবনা তৈরি হল দিল্লিতে ।
আজ সকালে বিস্ফোরক IED-সহ দিল্লিতে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । অভিযুক্ত আবু ইউসুফ । বয়স 30-এর কোঠায় । তার হেপাজত থেকে 30টি বোর পিস্তল , চারটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে । সে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন ISIS-র সক্রিয় সদস্য বলে সন্দেহ করছে পুলিশ । তার কাছ থেকে 15কেজি IED সহ স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে । প্রেসার ক্রুকারের মধ্যে বিস্ফোরক ছিল । তা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে । আফগানিস্তানের জঙ্গি সংগঠন ISKP নিয়ন্ত্রণ করত ইউসুফকে । ভারতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের পরিকল্পনা ছিল তার । এমনকী কাশ্মীরের IS-র সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল । তাকে তদন্তের জন্য উত্তরপ্রদেশের বলরামপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । সেখানেরই বাসিন্দা ইউসুফ ।
আজ সকালে দিল্লির ধৌলা কুয়াঁ এবং কারোল বাগ সংযোগস্থলে জঙ্গি ইউসুফের গুলি সংঘর্ষ হয় । তারপর তাকে গ্রেপ্তার করে । যেভাবে দিল্লির সেনা স্কুলের সামনে এই জঙ্গি কার্যকলাপ-পুলিশের গুলি বিনিময় চলে তা নিঃসন্দেহে দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে ।
গ্রেপ্তারির পর ইউসুফকে পাতিয়ালা হাউজ় কোর্টে তোলা হয়েছে । ঠিক কী কারণে ইউসুফ দিল্লির রাস্তায় বিস্ফোরক-সহ ঘোরাঘুরি করছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ । দিল্লি, উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় শুরু হয়েছে তল্লাশি । কয়েকটি জায়গা সিল করা হয়েছে । কোরোনা-লকডাউন পরিস্থিতিতে যেভাবে এক জঙ্গি বিস্ফোরক নিয়ে ঘুরল এবং তা সেনা স্কুলের সামনেই তা নিঃসন্দেহে দিল্লি প্রশাসন-নিরাপত্তা-গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার দিকে আঙুল কুলতে শুরু করেছে । তবে দিল্লি পুলিশের দাবি, তাদের সক্রিয়তার জন্য সহজেই ইউসুফের মতো জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে ।
দিল্লি পুলিশের কাছে খবর ছিল । সেই অনুযায়ী ধৌলা কুয়াঁয় ফাঁদ পাতে তারা । প্রথমে ওই আবু ইউসুফকে সতর্ক করে পুলিশ । তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলে । কিন্তু সে সেই কথা শোনেনি । পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে । আত্মরক্ষায় পালটা গুলি ছোড়ে পুলিশও । শেষ পর্যন্ত ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় ।
নাশকতা-হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ISIS জঙ্গি সংগঠন এক নতুন পন্থার সূচনা করেছিল কয়েকবছর আগে থেকে । আগে জঙ্গিদের একটি দল হামলা চালাত । কিন্তু ISIS জঙ্গি সংগঠনটি প্রথম এক ব্যক্তি দ্বারা হামলা চালু করে । অর্থাৎ সংগঠনের একজন সদস্যই একটা এলাকায় নাশকতা চালাবে । বিস্ফোরণ ঘটাবে । গুলি চালাবে । শেষে সে নিজেকে উড়িয়ে দেবে অথবা নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে প্রাণ হারাবে । যেভাবে আবু ইউসুফ একা দিল্লির রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছে, তাতে বছর কয়েক আগে নিউজ়িল্যান্ড ও লন্ডনের মতো হামলার ঘটনার কথাই মনে করিয়ে দিল । ওইসব ক্ষেত্রেও ISIS-র একজন সদস্য দ্বারাই হামলা সংগঠিত হয়েছে ।
ইউসুফের গ্রেপ্তারের পরেই দিল্লির প্রতিটি স্পর্শকাতর এলাকা- সংসদ ভবন, সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে । VIP-দের নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর ।