হায়দরাবাদ, 17 জানুয়ারি : "বাঁচার বড় ইচ্ছে ছিল স্যর । কিন্তু এই অত্যাচার আর সহ্য করা যায় না... তাই নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম । গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দেশলাই দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছিলাম ।" স্বামীর বিকৃত পৌরুষের শিকার হয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা সাহা । পোড়া শরীর নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ছয় দিন যমে মানুষে লড়াই । ছয় দিন পর সব জ্বালা থেকে মুক্তি । সাদা কাপড়ে মুড়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা । ঘরের ভিতরেই যদি ছবিটা এমন হয়, তবে ঘরের বাইরে নারী সুরক্ষার আশা করাটা বিলাসিতাই বটে ।
2019 সালের এনসিআরবি রিপোর্টে মহিলাদের উপর নৃশংসতা, পাশবিকতার যে ছবি সামনে এসেছিল, তা দেখে শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ । প্রতি 16 মিনিটে একজন করে ধর্ষিত হন দেশে । আর যতক্ষণে আপনি এই লেখাগুলি পড়ছেন, ততক্ষণে ভারতের কোনও এক কোণায় কোনও এক মহিলা হয়ত যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে গেছেন; শিকার হয়ে গেছেন কোনও বিকৃত যৌন লালসার ।
ভারতের মতো দেশ, যেখানে আজও মাতৃশক্তির আরাধনা করা হয়, সেখানে প্রতি ছয় মিনিটে শালীনতার মাত্রা পেরিয়ে কোনও মহিলা যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন । এনসিআরবির এই রিপোর্ট সামনে আসার আগে পর্যন্ত অনেকেই আন্দাজ করতে পারেননি দেশের নারী সুরক্ষার ছবিটা ভিতর থেকে এতটা ফাঁপা হয়ে গেছে ।
আরও পড়ুন : সৌদি আরবের মতো ধর্ষকদের রাস্তায় ফাঁসি দেওয়া উচিত, মত কঙ্গনার
কখনও যৌনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়া, আবার কখনও দিনের পর দিন আটকে রেখে গণধর্ষণ । দেশে নারী নির্যাতনের এমন ছবি আতঙ্কে সিঁটিয়ে যাওয়ার মতো । যে দেশে দিনে গড়ে 87 জন করে ধর্ষিত হন, সেখানে আর এই ধরনের ঘটনাগুলিকে কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনা বলা যায় না ।
হাথরসের নৃশংসতা এখনও মানুষের মনে স্পষ্ট । কিন্তু নৃশংসতা কমার কোনও লক্ষণ নেই । বিগত কয়েক দিনে একের পর এক নারী নির্যাতন ও বিকৃত কামের ছবি সামনে এসেছে, যা দেখে আতকে উঠেছে দেশবাসী ।
2018 সালের এনসিআরবি রিপোর্টে ধর্ষণে শীর্ষে ছিল মধ্যপ্রদেশ । পরিস্থিতি বদলাতে বেশ কিছু উদ্যোগও নিয়েছে শিবরাজ সিং চৌহানের সরকার । মহিলাদের উপর নির্যাতন কমাতে দু'সপ্তাহব্যাপী 'সম্মান' কর্মসূচি চলছে সেখানে । মানুষের কাছে গিয়ে গিয়ে প্রচার করা হচ্ছে , সচেতন করা হচ্ছে । কিন্তু পরিস্থিতি বদলাচ্ছে কই !