কিছু বরফ ধুলো নিয়ে জন্মায় এরা ৷ তারপর হঠাৎ কী যেন এক টানে সূর্যের দিকে ছুটে আসা ৷ হাজার-হাজার বছর পেরিয়ে যার সান্নিধ্যে আসে এরা, সেই সূর্যই হয়ে দাঁড়ায় এদের নিয়তি ৷ কেউ প্রদক্ষিণ শেষে বাড়ি ফেরে ৷ কেউ আবার সূর্যের কাছেই সঁপে দেয় নিজেদের ৷ বড় অদ্ভুত এই ধূমকেতুদের জীবন ৷
সাড়ে ছয় হাজার বছর পেরিয়ে আবার সেই রকম এক সময় এসে দাঁড়িয়েছে ৷ ফের পৃথিবীর কাছাকাছি এসেছে ধূমকেতু নিওওয়াইজ় ৷ কলকাতা-সহ গোটা ভারত থেকে খালি চোখে দেখা যাবে এই ধূমকেতুকে ৷ কিন্তু কীভাবে জন্ম হয় ধূমকেতুর, আর কীভাবেই বা মহাকাশে বিলীন হয়ে যায় ?
কী এই ধূমকেতু
ইংরেজি নাম কমেট ৷ ধুলোর কণা, বরফ ও গ্যাসের তৈরি এক ধরনের মহাজাগতিক বস্তু । দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে কয়েকশো কিলোমিটার পর্যন্ত হয় ৷
ধূমকেতুর শরীর ও মুগ্ধ করা লেজ
- ধূমকেতুর মূল শরীরকে বলা হয় নিউক্লিয়াস ৷ এর মধ্যে ধুলো-বালি, পাথর, বরফ, মিথেন, হাইড্রোজেন, অনেক সময় অ্যামোনিয়া, কার্বন ডাই অক্সাইড ও সামান্য পরিমাণ জল থাকে ৷
- যখন এরা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে, তখন সূর্যের উত্তাপে বরফকণা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়তে থাকে মহাকাশে । সূর্যের বিকিরণ বল ও সৌরবায়ুর প্রভাবেই এই অবস্থা হয় ধূমকেতুর ৷ এক কথায় এরা সূর্যের যত কাছে আসে, ততই ভাঙতে থাকে ৷ তখনই তৈরি হয় লেজ ৷ যার সৌন্দর্য মুগ্ধ করে আমাদের ৷
- ধূমকেতুর দুই ধরনের লেজ থাকে ৷ একটিকে ডাস্ট টেল বলা হয় ৷ যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই ৷ আর একটি হল প্লাজ়মা টেল ৷ যার ছবি তোলা যায় ৷ বা কোনও যন্ত্রের মাধ্যমে দেখা যায় ৷ কিন্তু খালি চোখে দেখা যায় না ৷
- সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি এর কক্ষপথের অংশের নাম পেরিহেলিয়ন ৷ আর দূরের অংশের নাম এপিহেলিয়ন ৷
ধূমকেতুর জন্ম ও পর্যায়কাল
- একটি ধূমকেতুর পর্যায়কাল কয়েক বছর থেকে শুরু করে কয়েকশো বা কয়েক হাজার বছর পর্যন্ত হতে পারে । স্বল্পকালীন ধূমকেতু সৃষ্টি হয় কুইপার বেল্ট থেকে যার অবস্থান নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে ৷ 200 বছরের মধ্যে হয় এদের পর্যায়কাল ৷ যেন হ্যালির ধূমকেতু ৷ 76 বছর পর্যায়কাল ৷
- দীর্ঘকালীন ধূমকেতু তৈরি হয় ওরট মেঘ থেকে, যা সৌরজগতের বাইরে একটি বরফময় বস্তুর গোলাকার মেঘ । এদের পর্যায়কাল 200 বছর থেকে কয়েক লাখ বছর হতে পারে ৷