পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Jun 23, 2020, 5:33 PM IST

ETV Bharat / bharat

LAC-তে স্থিতিশীল পরিস্থিতি বদলানোর চেষ্টা করছে চিন : ভারত

প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক স্মিতা শর্মা ৷

india-china clash
india-china clash

দিল্লি, 23 জুন : লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় স্থিতিশীল পরিস্থিতি একতরফাভাবে বদল করার চেষ্টা করছে চিন । আর এর ফলে হওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন কম্যান্ডিং অফিসার-সহ অন্তত তিনজন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে–এই ঘটনায় চিনকেই কাঠগড়ায় তুলেছে ভারত । মঙ্গলবার রাতে বিদেশমন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত সরকারি বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে যে, সোমবার রাতে যে সংঘর্ষ এবং আক্রমণ পালটা আক্রমণ হয়েছিল, তাতে ভারতীয় সেনা এবং চিনা PLA বাহিনী, দু’পক্ষেরই প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । 1975 সালের পর ভারত-চিন সীমান্তে এই প্রথম দু’দেশ সংঘর্ষে লিপ্ত হল আর তাতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটল । আর তাও আবার ঠিক এমন সময়ে, যখন দু’পক্ষের মধ্যে সীমান্তের একাধিক স্থানে সেনা মোতায়েন করা নিয়ে কয়েক সপ্তাহব্যাপী উত্তেজনা চলার পর, তা প্রশমনের উদ্দেশ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের পালা চলছিল ।

MEA মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, "পূর্ব লাদাখের সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি প্রশমনের জন্য সামরিক এবং কূটনৈতিক পথে আলোচনা চালাচ্ছে ভারত এবং চিন । গত ছয় জুন, 2020-তে সিনিয়র কম্যান্ডাররা এই নিয়ে সফলভাবে বৈঠক করেছিলেন এবং উত্তেজনা প্রশমনের জন্য একটি সর্বসম্মতভাবে পথ বেরও করেছিলেন । একইভাবে উচ্চস্তরে হওয়া ঐক্যমত কার্যকর করতে গ্রাউন্ড কম্যান্ডাররাও বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন ।"

শ্রীবাস্তব আরও জানিয়েছেন, "আমাদের ধারণা ছিল গোটা প্রক্রিয়া মসৃণভাবে সম্পন্ন হবে। কিন্তু গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC ) এলাকায় 15 জুন, 2020 সন্ধ্যা ও রাতের দিকে চিনা শিবিরের তরফে ওই এলাকায় একতরফাভাবে স্থিতাবস্থা বদলের চেষ্টা করা হয় । যার ফলে সংঘর্ষ বাধে । দু’পক্ষেই ক্ষয়ক্ষতি হয় । তবে যা ঘটেছে, তা এড়ানো যেত যদি উচ্চস্তরে হওয়া চুক্তি সতকর্তার সঙ্গে অনুসরণ করত চিনা ।"

এর আগে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের তরফে বেজিংয়ের বিদেশমন্ত্রককে জানানো হয়েছিল যে, ভারতীয় সেনারাই সংঘর্ষে উস্কানি দিচ্ছে । এই মর্মে তারা প্রতিবাদও জানিয়েছিল । আবার PLA-এর ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কম্যান্ডের মুখপাত্র কর্নেল ঝ্যাং শুইলিও দাবি করেন, গত ছয় জুন সেনা কম্যান্ডারদের আলোচনায় সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে দু’দেশের তরফে যে ঐক্যমত হয়েছিল, ভারতীয় সেনাবাহিনীই তা লঙ্ঘন করেছে । ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন, "সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে ভারতের দায়িত্বশীল অবস্থানের কথা বিচার করে বলা যায়, ভারতের অবস্থান এবিষয়ে খুবই স্পষ্ট । সমস্ত গতিবিধি যেন LAC-র ভারতীয় অভিমুখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক । আমরা চাই, চিনও এই বিধি মেনে চলুক ।"

সোমবার রাতে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর ভারতের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ, আশঙ্কার দোলাচলের মধে্যই নয়াদিল্লিতে দফায় দফায় জরুরি বৈঠক হয়েছে । সোমবার সকাল থেকে উপদ্রুত এলাকার উত্তেজনা কমাতে পূর্ব লাদাখেও সেনাবাহিনীর মধে্য আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, CDS বিপিন রাওয়াত এবং তিন সেনাপ্রধানের সঙ্গে বিকেলে জরুরি বৈঠক করেন । যা চলে 75 মিনিট ধরে । ফের সন্ধ্যায় রাজনাথ সিং, CDS রাওয়াত, EAM জয়শঙ্কর এবং সেনাপ্রধান নারওয়ানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠক হয়।

ভারতের তরফে সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার প্রতি আমরা দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ মেটাতে চাই । কিন্তু একই সঙ্গে আমরা ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক সংহতি বজায় রাখার প্রতিও কঠোরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details