পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

"জ়িরো বাজেট ফার্মিংয়ে সহমত নই, এ'দশক চিরসবুজ বিপ্লবের" - এম এস স্বামীনাথন

ETV ভারতের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে সবুজ বিপ্লবের জনক ডঃ এম এস স্বামীনাথন। দেশে কৃষির ভবিষ্যৎ, বর্তমান পরিস্থিতি, বিনিয়োগ, জ়িরো বাজেট ফার্মিং সহ একাধিক বিষয়ে কথা বললেন তিনি।

ছবি
ছবি

By

Published : Jan 28, 2020, 9:29 AM IST

Updated : Jan 28, 2020, 12:47 PM IST

চেন্নাই, 28 জানুয়ারি : চলতি বছরের বাজেট পেশ 1 ফেব্রুয়ারি । তার আগে ETV ভারতের মুখোমুখি কৃষি বিজ্ঞানী ও ভারতের সবুজ বিপ্লবের জনক ডঃ এম এস স্বামীনাথন। তাঁর কথায় এই দশক স্থিতিশীল কৃষির দশক । শুধু সবুজ বিপ্লবের দশক নয় চিরসবুজ বিপ্লবের দশক । জ়িরো বাজেট ফার্মিং থেকে কৃষকদের দ্বিগুণ আয় কিংবা কৃষিতে বিনিয়োগ একাধিক বিষয়ে কথা বললেন তিনি ।

ETV ভারত : কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে । বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি সম্ভব বলে আপনার মনে হয়?

ডঃ স্বামীনাথন : প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বলেছিলেন যে, কয়েক বছরের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে হবে । আমাদের ভাবনায় এটি সম্ভব । কিন্তু, কোনওকিছুই সহজে হয় না । কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা গুরুত্বপূর্ণ ।

ETV ভারত : কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য এবং কৃষির অবস্থা স্থিতিশীল করে তোলার জন্য সরকারকে কী পদক্ষেপ নিতে হবে?

ডঃ স্বামীনাথন: চাষবাসে যে উৎপাদন খরচ, বিক্রয় মূল্য, করনীতি, সেচসহ বাজারের পরিকাঠামো, ফসল কাটার পরের প্রযুক্তি সবকিছুতেই আমাদের মনোনিবেশ করা দরকার । উদাহরণ হিসেবে মায়ানমারের কথা বলা যেতে পারে । সেখানে একটি ধানগাছের প্রতিটি অংশকে ব্যবহার করেন কৃষকরা । এর মাধ্যমে কৃষকদের উপার্জন তিনগুণ এমনকি চারগুন পর্যন্ত বেড়েছে । একে রাইস বায়ো পার্ক বলা হয় । একইভাবে আমাদের দেশে, একটি রাইস বায়ো পার্ক বা হুইট বায়ো পার্ক তৈরি করা যেতে পারে । যে কোনও শস্যের একটি গাছের প্রতিটি অংশের অর্থনৈতিক মূল্য রয়েছে । এই মুহূর্তে আমরা একটি গাছের 40-50 শতাংশ ব্যবহার করছি । তাই আমাদের কাছে প্রচুর সুযোগ রয়েছে ।

ভিডিয়োয় শুনুন ডঃ স্বামীনাথনের বক্তব্য

ETV ভারত : কৃষকরা যখন রাস্তায় প্রতিবাদ করেন, আপনার কি মনে হয় তা দেখে যুবসমাজ কৃষিকাজে উৎসাহী হবে ?

ডঃ স্বামীনাথন : যুবকরা যদি কৃষিকাজে আগ্রহী না হয়, তাহলে কৃষকদের কোনও ভবিষ্যত নেই । একমসয় আমিও কৃষিকাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম । আমি মেডিকেল কলেজে ভরতি হয়েছিলাম । কিন্তু পরে কৃষিক্ষেত্রে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই । কারণ আমার মনে হয়েছিল ভবিষ্যৎ কৃষির উপরই নির্ভরশীল । কৃষির অগ্রগতি আবার বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল । এজন্যই আমি চিকিৎসাবিদ্যা থেকে কৃষিবিদ্যায় চলে আসি ।

ETV ভারত : কেমন দেখছেন কৃষির ভবিষ্যৎ ?

ডঃ স্বামীনাথন : যদি প্রযুক্তি, বাণিজ্য ও জলবায়ুর সঙ্গে আমরা কাজ করতে পারি, তাহলে কৃষির ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল । তবে কৃষিক্ষেত্রে টাকার চেয়ে বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা বেশি । কৃষকদের বেশি আয় করা অত্যন্ত জরুরি, পাশাপাশি কৃষিতে বেশি বিনিয়োগও জরুরি । সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে স্থিতিশীল কৃষির জন্য আমরা কতটা প্রাথমিক পরিকাঠামো দিতে পারছি, তার উপরই নির্ভর করছে পুরো বিষয়টি । এই দশক স্থিতিশীল কৃষির দশক । এটি সবুজ বিপ্লবের দশক নয় চিরসবুজ বিপ্লবের দশক । আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার (ITO)-র বিশ্ব বাজার নীতির প্রভাব আমাদের উপর পড়া উচিত নয় । আমাদের একটি জাতীয় বাণিজ্য কমিশন থাকা উচিত ।

ETV ভারত : জ়িরো বাজেট ফার্মিং প্রসঙ্গে বিস্তর আলোচনা চলছে । এর মাধ্যমে কি পুরো দেশকে খাওয়ানো যাবে ?

ডঃ স্বামীনাথন : জ়িরো বাজেট ফার্মিংয়ের সঙ্গে একমত নই আমি । কোনওকিছুই শূন্য নয় । জ়িরো বাজেটে কৃষিকাজ বলতে অর্থমন্ত্রী বুঝিয়েছেন, আমরা যাতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হ্রাস করতে পারি ও উৎপাদন আরও বাড়াতে পারি ।

ETV ভারত : কৃষিতে বিনিয়োগের ভূমিকা কী?

ডঃ স্বামীনাথন : প্রথম ও প্রধান বিষয় হল বিনিয়োগ । মাটির স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে গাছের স্বাস্থ্য নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগের প্রয়োজন । বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা আশা করি, নতুন ভারতের নতুন কৃষি হবে কৃষক সহায়ক, দারিদ্র সহায়ক ও গ্রাহক সহায়ক ।

Last Updated : Jan 28, 2020, 12:47 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details