লকডাউন বুঝিয়ে দিয়েছে দূষণমুক্ত শহর কতটা সুন্দর ৷ বড় বড় শহরগুলিতে দূষণের অন্যতম কারণ কার্বন মনোক্সাইড, পেট্রল-ডিজ়েলের মতো জ্বালানিতে চলা গাড়ি থেকে বেরোনো রাক্ষস-কালো ধোঁয়া ৷ এতটা জানার পরেও ভারতের ট্রামের ইতিহাস দিনে দিনে বিবর্ণ হয়েছে কেবল ! হ্যাঁ, শুধু কলকাতা নয়, ভারতের বহু শহরে ট্রাম চলত স্বমহিমায় ৷ দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কানপুর, নাসিকের মতো শহরের অতীতের গায়ে লেগে আছে ট্রামের গন্ধ ৷
তবে, এদেশে প্রথমবার ট্রাম চলে কলকাতাতেই ৷ সে ছিল ঘোড়ায় টানা ট্রাম ৷ দিনটা 24 ফেব্রুয়ারি, 1873 ৷ রুট ছিল আর্মেনিয়ান ঘাট থেকে শিয়ালদা৷ পরে ব্যবহৃত হয় স্টিম ইঞ্জিন ৷ ইলেকট্রিক ট্রামের যাত্রা শুরু আরও পরে, 1902 সালে ৷ যা এশিয়া মহাদেশেরও প্রথম বিদ্যুৎচালিত ট্রাম ৷ স্বাধীনতার পরে কলকাতা ট্রাম কম্পানিকে অধিগ্রহণ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৷ তবে, থেকেই ধুয়ো উঠেছে, সিটি অব জয়ের রাজপথ থেকে বিদায় নেবে সে, এমন টলমল পরিস্থিতির মধ্যেও টিকে আছে কলকাতার অন্যতম চরিত্র ট্রাম ৷ কিন্তু, আমরা ভুলে গেছি, ট্রাম ছিল আমচি মুম্বইয়েরও অন্যতম গতি ৷
মুম্বই
বম্বে ট্রাম কম্পানির জন্ম 1873 সালে ৷ পরের বছর 9 মে-তে প্রথমবার ঘোড়ায় টানা ট্রাম নামে তৎকালীন বম্বের রাজপথে ৷ কোলাবা থেকে পাইধোন ছিল যাত্রাপথ ৷ ভাড়া তিন আনা ৷ নয়া যান জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় পরে ভাড়া কমে হয় 2 আনা ৷ মুম্বইয়ে ইলেকট্রিক ট্রাম চালু হয় 1907 সালে ৷ অফিস টাইমের ভিড় সামলাতে 1920 সালের সেপ্টেম্বরে চালু হয় ডবল ডেকার ট্রাম ৷ যতদিন আরব সাগরের তীরে ট্রেন পরিষেবা ছিল দুর্বল, ততদিন ট্রামই রাজ করেছে সিনেমার শহরে ৷ 1964 সালের 31 মার্চ তারিখে ট্রাম পরিষেবা বন্ধ করে দেয় মুম্বই প্রশাসন ৷
নাসিক
নাসিকে প্রথম ট্রামের চাকা ঘোরে 1889 সালে ৷ দুই কামরার চার ঘোড়ায় টানা ট্রাম ৷ রুট ছিল শহরের পুরানো পৌরভবনের সামনে থেকে নাসিক রেল স্টেশন ৷ দূরত্ব 10 কিলোমিটার ৷ সে সময় ওই অঞ্চলে গভীর জঙ্গল ৷ সেই জঙ্গলে ডিঙিয়ে স্টেশনে যাওয়ার একমাত্র যানবাহন ছিল ট্রাম ৷ 1933 সালে ফুরিয়ে যায় নাসিক শহরের ট্রাম চলাচলের ইতিহাস ৷