পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

জিনগত বিকৃতির কারণেই কাজিরাঙার 'সোনালি' বাঘিনী, মত বিশেষজ্ঞদের - অসমের খবর

কিছুদিন আগেই সোনালি রঙের এক বাঘিনীর দেখা মিলেছে কাজিরাঙায় । যেসব জিনগুলির বৈশিষ্ট্য সুপ্ত অবস্থায় থাকে, সেগুলি প্রকাশ পাওয়ার কারণেই এমন আলাদা ধরনের গায়ের রঙ তৈরি হয় । এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।

Kaziranga National Park
কাজিরাঙার সোনালি বাঘ

By

Published : Jul 15, 2020, 9:30 PM IST

গুয়াহাটি, 15 জুলাই : সম্প্রতি অসমের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে দেখা মিলেছে 'সোনালি' বাঘিনীর । বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা এক ধরনের জিনের কারণেই এই বাঘিনীর গায়ের রঙ সোনালি । এই ধরনের বাঘ আপাতত জাতীয় উদ্যানে একটিই রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে ।

2014 সালে সারা ভারতজুড়ে টাইগার মনিটরিং এক্সারসাইজ় চলাকালীন প্রথমবার এই বাঘিনীর দেখা মিলেছিল জাতীয় উদ্যানে । NGO আরণ্যকের বাঘ সংক্রান্ত গবেষণা ও সংরক্ষণ বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, "বাঘিনীটির গায়ের রঙ ছিল হালকা হলুদ । গায়ের উপর কালো কালো ডোরা কাটা দাগগুলি ছিল অনেকটা সরু । আর পাঁচটা সাধারণ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের তুলনায় বাঘিনীটির মুখের দিকটা আর পেটের দিকটা ছিল বেশ কিছুটা সাদাটে ।"

সম্প্রতি যে বাঘিনীর দেখা মিলেছে, সেটির ছবি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন বনবিভাগের এক আধিকারিক । আর শেয়ার করার সঙ্গে সঙ্গেই ভাইরাল হয় ভিডিয়োটি । মানুষের মধ্যে কৌতুহলও বাড়তে থাকে ।

তিনি বলেছেন, " যে বাঘিনীর দেখা মিলেছে, সেটির গায়ে ডোরা কাটা দাগগুলি বেশ সরু । রঙটাও কম ঘন । এইজন্য বাকিদের থেকে দেখতে অনেকটা আলাদা এই বাঘ । বাঘের গায়ের রঙ মূলত নির্ভর করে তাদের জিনগত গঠনের উপর । যেসব জিনগুলির বৈশিষ্ট্য সুপ্ত অবস্থায় থাকে, সেগুলি প্রকাশ পাওয়ার কারণেই এমন আলাদা ধরনের গায়ের রঙ তৈরি হয় ।"

এই বিশেষ সোনালি গায়ের রঙের কারণে বাঘিনীটির ব্যবহারিক কোনও পরিবর্তন এসেছে কি না তা নিয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি । তবে বাঘিনীটি এখন পূর্ণবয়স্ক এবং কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে রয়েছে ।

বিশিষ্ট্য বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র শর্মা ও কামাল আজ়াদের কথায়, এই ধরনের রঙ খুব একটা দেখা যায় না । পৃথিবীতে খুব কমই এমন বাঘের দেখা মিলেছে ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একদিকে বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে যাওয়া এবং একই প্রজাতির মধ্যে অত্যাধিক মাত্রা প্রজননের কারণেই এই ধরনের বিচিত্র রঙের দেখা দিয়েছে ।

কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের গবেষক রবীন্দ্র শর্মা জানিয়েছেন, একই প্রজাতির মধ্যে অত্যাধিক মাত্রা প্রজননের কারণেই অপ্রকট জিনগুলি প্রকট হয়ে ওঠে ।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, এই যে সোনালি রঙের বাঘিনীর দেখা মিলেছে, তাতে উৎফুল্ল হওয়ার কিছু নেই । বরং আমাদের চিন্তা করতে হবে, কীভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বিভিন্ন বাঘের প্রজাতিগুলির মধ্যে আবার যোগসূত্র তৈরি করা যায় । এরফলে বাঘের আন্তঃপ্রজননের হার কিছুটা কমবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।

কাজিরাঙার এই বাঘিনীটিকে 2014 সাল থেকে শুরু করে একাধিকবার দেখা গেছে । এর আগে 2016 সালে বাঘিনীটির একটি ছবি সামনে এসেছিল । তখন সে একটি বাঘের সঙ্গে ছিল । তবে ছবি অস্পষ্ট থাকার কারণে সেটি ওই বাঘিনীর বাচ্চা না কি সঙ্গী, তা জানা যায়নি । এই বাঘিনীর বাচ্চাটিও কি এই ধরনের বিকৃত জিনের হবে কি না তা জানতে মুখিয়ে রয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details