পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

সরকারগুলির খাদ্য সহায়তা ! - IMF

এপ্রিলে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (IMF) যে ভবিষ্যৎবাণী করেছিল, যে 1930-এর গ্রেট ডিপ্রেশনের মতো সংকট আসতে চলেছে, সেটাই সত্যি বলে প্রমাণিত হচ্ছে । বিশ্বব্যাঙ্ক চার মাস আগেই আন্দাজ করেছিল যে মানুষের মাথাপিছু আয় ধসে পড়বে আর লাখ লাখ মানুষ দারিদ্রে ডুবে যাবে । এখন তারা বলছে, যে এই দুরবস্থা চলবে 2021-এর শেষ পর্যন্ত ।

Food support
ছবিটি প্রতীকী

By

Published : Oct 13, 2020, 12:52 PM IST

ধসে পড়া অর্থনীতি, বিপর্যস্ত একের পর এক ক্ষেত্র, জীবনহানি, শতবিভক্ত জীবিকা – বিশ্বজুড়ে আজ কোভিড সংকটের ভয়াবহ পরিণতি এগুলি । এপ্রিলে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (IMF) যে ভবিষ্যৎবাণী করেছিল, যে 1930-এর গ্রেট ডিপ্রেশনের মতো সংকট আসতে চলেছে, সেটাই সত্যি বলে প্রমাণিত হচ্ছে । বিশ্বব্যাঙ্ক চার মাস আগেই আন্দাজ করেছিল যে মানুষের মাথাপিছু আয় ধসে পড়বে আর লাখ লাখ মানুষ দারিদ্রে ডুবে যাবে । এখন তারা বলছে যে এই দুরবস্থা চলবে 2021-এর শেষ পর্যন্ত । এর জেরে ভয়াবহ দারিদ্রের মধ্যে থাকা 15 কোটি মানুষের জন্য নীতি বদল ও উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া ও সাব সাহারান আফ্রিকায় । এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ও ফিচ-এর মতো মূল্যায়নকারী সংস্থা, এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কও অনুমান করছে যে ঘরোয়া আর্থিক ক্ষেত্রের 9 থেকে 9.6 শতাংশ পতন ঘটবে । কোরোনা মহামারী এবার অর্থনীতিকে একটা জোরালো আঘাত করেছে, যা আগে থেকেই প্রকৃত মন্দার দোরগোড়ায় ছিল । লাখ লাখ শ্রমিক এবং তাঁদের উপর নির্ভরশীলরা, যাঁদের কোনও স্থায়ী উপার্জন নেই, তাঁরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন । যতদিন না কোভিডের পর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে এবং পরিকল্পনা ও প্রকল্পগুলির রূপায়ণ হয়, ততদিন এই নিরবচ্ছিন্ন সংকটের মধ্যে লাখ লাখ দরিদ্র মানুষের ক্ষুধা দূর করা যাবে কী করে ?

যেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোভিড সংকটের জেরে ক্ষতি হয়েছে, সেখানে স্বস্তির বিষয় হল- সারা বছর রেশন দোকানগুলিতে সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য গুদামঘরগুলিতে মজুত আছে । রবিশস্যের পর্যাপ্ত ফলন হাতের কাছে রয়েছে । এই অবস্থায় সরকারের উচিত, এই অভূতপূর্ব সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য আরও প্রস্তুত থাকা । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছেন যে তিনি নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত দেশের 80 কোটি গরিব মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য ও ডাল দিতে চান । কোরোনা মহামারীর জন্য যাঁরা কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের বিনামূল্যে রেশন পৌঁছে দেওয়ার মানবিক দায়িত্ব সরকারকেই কাঁধে তুলে নিতে হবে, যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ।

কতজন জীবিকা হারিয়ে দারিদ্রের সঙ্গে যুঝে চলেছেন, সেটা খুঁজে বের করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় একটি রাজ্যভিত্তিক ও জেলাভিত্তিক সমীক্ষা চালানো উচিত । একটা স্বচ্ছ্ব ও ন্যায়সঙ্গত বণ্টন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে রেশনের সামগ্রী একমাত্র দুর্গতদের কাছেই পৌঁছায় । খাদ্যশস্যের পুরো খরচটা কেন্দ্রেরই বহন করা উচিত । রাজ্য সরকারগুলিকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে পুরো বণ্টন প্রক্রিয়াটা পরিচালনা করতে হবে, এবং কঠোরভাবে দেখতে হবে যাতে কোনও মধ্যস্বত্ত্বভোগী না ঢুকে পড়ে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, বাংলায় আঘাত করেছিল ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ । গুদামগুলি তখন শস্যে পরিপূর্ণ থাকা সত্ত্বেও, ব্রিটিশ সরকারের নীতির ব্যর্থতায় প্রায় 30 লাখ মানুষ মারা গিয়েছিলেন । একমাত্র একটা শক্তিশালী ও নিশ্ছিদ্র পরিকল্পনাই নিশ্চিত করতে পারে, যাতে এই দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি না হয়, এবং লাখ লাখ মানুষের জীবনরক্ষা হয় ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details