পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

প্রথা ভেঙে কাশ্মীরি বালিকা সাজাদ আমিন এখন আধুনিকা লাদিশা - কাশ্মীরের প্রথম মহিলা লাদিশা

কাশ্মীরে ‘লাদিশা’ মানেই বৃদ্ধ এবং স্বল্পবাস পরিহিত কোনও মানুষ , যিনি একটি দুকাইরে (এক ধরনের সুর যন্ত্র) বাজিয়ে জিঙ্গল বা দুঃখের গান গেয়ে চলেন, যার মধ্য দিয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সমালোচনা ফুটে ওঠে । প্রাচীন উপকথা অনুসারে লাদিশারা দরজায় দরজায় ঘোরেন এবং আমজনতাকে সরকারের নানা উদ্যোগ সম্পর্কে অবগত করেন ।

সাজাদ আমিন
সাজাদ আমিন

By

Published : May 29, 2020, 12:57 PM IST

শ্রীনগর : কাশ্মীরের নিজস্ব ব্যঙ্গধর্মী একপ্রকার শিল্পকলার নাম লাদিশা, যেখানে ব্যঙ্গাত্মক কথার সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে গান গাওয়া হয়। গানের কথায় বেশিরভাগ সময়ই বর্তমান সমাজের সাম্প্রতিক নানা সমস্যা এবং তার প্রেক্ষিতে নানা ধরনের মতামত ফুটে ওঠে । এইসব গানের বেশিরভাগই আবার সামাজিক-রাজনৈতিক নিয়ে হয় ।

কাশ্মীরে ‘লাদিশা’ মানেই বৃদ্ধ এবং স্বল্পবাস পরিহিত কোনও মানুষ , যিনি একটি দুকাইরে (এক ধরনের সুর যন্ত্র) বাজিয়ে জিঙ্গল বা দুঃখের গান গেয়ে চলেন, যার মধ্য দিয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সমালোচনা ফুটে ওঠে । প্রাচীন উপকথা অনুসারে লাদিশারা দরজায় দরজায় ঘোরেন এবং আমজনতাকে সরকারের নানা উদ্যোগ সম্পর্কে অবগত করেন । এই সবই হত ডোগরা শাসনে তৎকালীন মহারাজার কার্যকালে ।

“আসালামুয়ালিকুম! লাদিশা আও...আসালামুয়ালিকুম! লাদিশা আও”...( লাদিশা এসেছে, তার অভিনন্দন) ।

সইদ আরিজ, শ্রীনগরের জাদিবাল এলাকার একটি ছোট্ট মেয়ে । গতে বাধা সব ছক ভেঙে, পুরুষশাসিত কাশ্মীরে এই ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে শখ হিসাবে গ্রহণ করেছে সে । লাদিশার ঐতিহ্য এবং অভিনব বিধি অনুসরণ করেননি আরিজ । তবে তাঁর মৌখিক উপস্থাপনা এবং গানের কথা প্রাচীন উপকথা মেনেই এগিয়েছে, আর তাই তাঁকে অভিহিত করা হয়েছে আধুনিক লাদিশা হিসাবে ।

সম্প্রদায়ভিত্তিক যোগাযোগের সেরা মাধ্যম হিসাবে প্রায়ই অভিহিত করা হয় লাদিশাকে । এতে কোনও রূপক শব্দের ব্যবহার নেই , নেই কোনও গোপন মত প্রচারও । রয়েছে শুধুমাত্র সহজ সাধারণ স্থানীয় বা কাশ্মীরি ভাষায় কিছু তথ্য প্রদান করা ।

ETV ভারতের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আরিজ জানিয়েছেন, তিনি প্রথম লাদিশা করেছিলেন PSA তথা জন-নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার এবং রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে ।

লাদিশা সম্পর্কে ঠাকুমার বলা গল্পের কথা স্মরণ করে আরিজ জানান, “আমি কাশ্মীরি সংস্কৃতির পুনরুত্থান করতে চেয়েছিলাম । একই সঙ্গে কাশ্মীরের মানুষদের সঙ্গে নিজের অনুভূতি, অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চেয়েছিলাম । কারণ লাদিশার মধ্যে দিয়ে আমি শান্তি খুঁজে পাই ।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, সব সময় তাঁর পরিবার এই কাজে পাশে রয়েছে । আজ তিনি ‘কাশ্মীরের প্রথম মহিলা লাদিশা’ রূপে সর্বজনবিদিত।

আরিজ প্রথম প্রচারের আলোয় এসেছিলেন কাশ্মীরি সাংবাদিকদের উপর থেকে ‘অবৈধ কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ আইন’( UAPA) প্রত্যাহারের দাবিতে প্রকাশিত একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে । 2.57 মিনিটের সেই ভিডিয়োতে আরিজ খুব সুন্দরভাবে সাংবাদিকদের উপর এই কড়া আইন চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে নিজের মত প্রকাশ করেছেন এবং নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details