পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

বুলেট বিচার : স্বাধীন তদন্ত সবার আগে কাম্য - জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে একটি ভুয়ো সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল  । NHRC-র প্রাক্তন চেয়ার পার্সন ভেঙ্কটাচালিয়ার সব মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন । সেই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কারোর মৃত্য়ু হলে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । একইসঙ্গে উপদেশ ছিল রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার যেন ইতিবাচক পদক্ষেপ করে সেদিকটা দেখার ।

rape
rape

By

Published : Dec 14, 2019, 6:19 AM IST

সকলের জানা, পরিচিত একটি বিষয় নিয়ে এখন আলোচনা তুঙ্গে । তা হল 'বুলেটের দ্বারা বিচার ' । যার একপক্ষে কিছু মানুষ রয়েছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন পুলিশের সংঘর্ষে দিশার খুনিদের মৃত্যু প্রকৃত শাস্তি । অন্যদিকে অপরপক্ষের দাবি, এটা কোনওভাবে শাস্তির প্রকৃত উপায় হতে পারে না । সপ্তাহ কয়েক আগে এই সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতে একবার সুপ্রিম কোর্ট , একবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নীতিগুলির উপর চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (NHRC)-র দেওয়া নির্দেশাবলী : ১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে একটি ভুয়ো সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল । NHRC-র প্রাক্তন চেয়ার পার্সন ভেঙ্কটাচালিয়ার সব মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন । সেই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কারোর মৃত্য়ু হলে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । একইসঙ্গে উপদেশ ছিল রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার যেন ইতিবাচক পদক্ষেপ করে সেদিকটা দেখার । উপদেশগুলি নিম্নরূপ ।

  • পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যুর পর পুরো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ নথিভুক্ত করে রাখতে হবে ।
  • নির্দেশ দেওয়ার পর কোনও সংঘর্ষে কারোর মৃত্যু হলে স্বাধীনভাবে উপযুক্ত তদন্ত করতে হবে ।
  • বেশকিছু পুলিশ স্টেশনে দেখা গেছে অনেক সংঘর্ষের খবর নথিভুক্ত নেই । এক্ষেত্রে সংঘর্ষের কারণ এবং নথিভুক্ত না হওয়ার কারণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করতে হবে CID-র মত একটি নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে ।
  • ঘটনা ঘটার পরই শীঘ্রই FIR দায়ের করে নির্দিষ্ট ধারা অনুসারে মামলা শুরু করতে হবে । এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে ।
  • ঘটনা ঘটার পর সর্বোচ্চ তিনমাসের মধ্যে সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং দোষীকে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে ।
  • ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্ত করে তার রিপোর্ট তিন মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে ।
  • এমন ঘটনা ঘটলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে রিপোর্ট পেশ করতে হবে ।
  • ময়নাতদন্ত সহ সবরকম পরীক্ষা সম্পূর্ণ করে তিন মাসের মধ্যে পুরো তথ্য পেশ করতে হবে । ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে সাহায্য করতে পবে ।


সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশাবলী : ২০১৪ সালে 23 সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে বিশেষ উপদেশ-নির্দেশ দিয়েছিল । সেগুলি হল :

  • সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেই পুলিশকে দ্রুততার সঙ্গে অবশ্যই তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নথিভুক্ত করতে হবে । সম্ভব হলে কেস ডায়েরি সহ সবকিছু ভিডিয়োগ্রাফ করতে হবে । দ্রুততার সঙ্গে FIR দায়ের করে তদন্ত করতে হবে ।
  • FIR, কেস ডায়েরি, ময়নাতদন্ত সহ সব তথ্য অতি শীঘ্র আদালতের কাছে পেশ করতে হবে ।
  • সংঘর্ষের পুর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে পেশ করতে হবে ।
  • জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপ সবক্ষেত্রে জরুরি নয় । গুরুত্ব বুঝেই তারা নিরপেক্ষ এবং স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারেন ।
  • ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করতে হবে । অকস্থল থেকে সবরকম সাহায্য পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে ।
  • ৬ মাসের মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে রিপোর্ট পেশ করতে হবে ।
  • CID বা অন্য কোনও থানাকে দিয়ে স্বাধীনভাবে ঘটনার পুর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে ।
  • অতি অবশ্যই ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফ করতে হবে ।
  • অপরাধ দমন আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুততার সঙ্গে করতে হবে ।
  • চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনওরকম ঢিলেমি দেওয়া চলবে না ।
  • ঘটনার পর যতক্ষণ না পর্যন্ত তদন্তের কোনও নিষ্পত্তি হচ্ছে ততক্ষণ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্তাদের পুরস্কৃত করা বা পদন্নোতি করা যাবে না ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details