দিল্লি, ২৮ ফেব্রুয়ারি : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই গতকাল সকালে নিখোঁজ হয় ভারতীয় বায়ুসেনার দু'টি বিমান। ভারতের তরফে বিমান নিখোঁজের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয়। এরপর পাকিস্তান দাবি করে ভারতের ওই দু'টি বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছিল। দুটি বিমানকেই গুলি করে নামানো হয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, দুটি বিমানের পাইলটকেই বন্দী করা হয়েছে। আর এরপরেই সুর চড়াতে শুরু করে দিল্লি।
এরপর পাকিস্তান একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আনে। যেখানে দেখা যায় এক বন্দী পাইলটকে রীতিমতো মারধর করা হচ্ছে। তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তাঁর চোখ ও হাত বাঁধা। আর তারপরেই পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দেয় ভারত।
পাকিস্তান সেনার মুখপাত্র মেজর জেনেরাল আসিফ গাফুর বিবৃতি দিয়ে জানান, "আমরা ভারতীয় বায়ুসেনার দুই পাইলটকে বন্দী করেছি। তাঁদের মধ্যে একজন আহত। তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। অন্য পাইলট আমাদের হেপাজতে রয়েছে। তাঁর নাম অভি নন্দন। সামরিক রীতি মেনেই তাঁর সঙ্গে আচরণ করা হচ্ছে।"
পাকিস্তান অভি নন্দনের ভিডিয়ো সামনে আনার পর ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। অভি নন্দনের সঙ্গে সঠিক আচরণ করা হচ্ছে না। অবিলম্বে তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিও করে দিল্লি। ভারতে পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে এবিষয়ে নিজেদের বক্তব্য স্পষ্ট জানিয়ে দেয় দিল্লি।
ভারত যে ভিয়েনা চুক্তির উল্লেখ করেছে, কী রয়েছে তাতে ?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে তৃতীয় ভিয়েনা কনভেনশন হয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন দেশের যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে আলোচনা হয়। কাদের যুদ্ধবন্দী হিসেবে গণ্য করা হবে, তাঁদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করা হবে এবং কীভাবে তাঁদের শত্রু দেশ থেকে নিজেদের দেশে ফেরানো হবে, সে বিষয়ে সবিস্তারে ওই কনভেনশনে আলোচনা হয় এবং তার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট নিয়মাবলী তৈরি হয়। অন্যান্য দেশের পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানও ভিয়েনা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলির প্রত্যেকের এই নিয়মাবলী মেনে চলার কথা। চুক্তি অনুসারে যুদ্ধবন্দীদের যাবতীয় অধিকার রক্ষা করতে হবে। বন্দিদের যাতে সম্মান ক্ষুন্ন না হয় তার দায়িত্বও নিতে হবে প্রতিটি দেশকে।
কিন্তু ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট অভি নন্দনের ক্ষেত্রে সেই চুক্তি পাকিস্তান মানছে না বলে অভিযোগ ভারতের।