দিল্লি, 10 জুন : যতক্ষণ না চিকিৎসাবিজ্ঞান কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলার কোনও উপায় বের করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত অর্থনীতিকে বাঁচাতে সরকারের কোনও ফিসকাল ও মনিটারি প্রকল্প কাজে আসবে না । মত বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সুনীল সিনহার।
কোরোনা ভাইরাস রোধে দেশব্যাপী লকডাউনের জেরে অর্থনীতির বেহাল দশাকে আটকতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতমাসে 20 লক্ষ কোটি টাকার ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন। যদিও সুনীল সিনহার দাবি, এর পরেও অর্থনীতিতে কোরোনা সংকটের প্রভাব থেকে যাবে । তিনি বলেন, “সরকার আনলক করে জনজীবনকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সত্যতা হল শুধু আনলক করে বা লকডাউনকে তুললেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা যাবে না।”
সুনীল সিনহা ETV ভারতকে বলেন, “2008 ও 2018-19-র আর্থিক মন্দার মতো এবারের এই মন্দা নয়। আগেরগুলি হয়েছিল বিশ্ব আর্থিক মন্দার জন্য। এবার একটি হয়েছে চিকিৎসাজনিত কারণে। সুতরাং, যতদিন পর্যন্ত চিকিৎসা বিজ্ঞান COVID-19-কে রোধ করতে না পারছে, ততদিন পর্যন্ত এই আর্থিক মন্দাও থাকবে। কোনরকম ফিসকাল ও মনিটারি প্রকল্প এর সমাধান করতে পারবে না। ”
তিনি আরও বলেন, “সরকার এই মন্দাকে মেটাতে পারবে না, শুধুমাত্র ক্ষতির পরিমান কমাতে পারে। কারণ এই মন্দার পিছনে রয়েছে রোগজনিত কারণ। ফলে এই রোগকে নির্মূল করা গেলেই কাটবে অর্থনৈতিক মন্দা।"
সুনীল সিনহা জানিয়েছেন, “এই ভাইরাস মোকাবিলায় চিকিৎসাবিজ্ঞান দিনরাত কাজ করে চলেছে। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের জেরে বিশ্বে 4,10,000 জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বের পাশাপাশি ভারতের গবেষকরাও কোরোনার ভ্যাকসিন ও ওষুধ তৈরির জন্য কাজ করে চলেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারতে কোরোনা আক্রান্ত হয়েছেন 2,73,000 জন। আক্রান্তের সংখ্যা যদি এইভাবে বাড়তে থাকে তাহলে ফের লকডাউন ঘোষণা করতে হবে সরকারকে। যা অর্থনীতিকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে দেবে। ”
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী এই সংকট থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন। বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কর্মী ছাঁটাই না করার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে এই অবস্থা ধরে রাখা খুবই মুশকিল হবে সরকারের পক্ষেও।”
“তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যায় এবং তখন থেকেই যদি তা প্রয়োগ করা হয় তাহলে দ্রুত এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে”,মত বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সুনীল সিনহার।