কোঝিকোড়, 11 জুন : ফের পশুর উপর মানুষের অত্যাচার ৷ আবারও কেরালা ৷ তবে এবার মালাপ্পুরাম নয়, ত্রিশূর ৷ গতকাল পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার করে একটি রাস্তার কুকুরকে ৷ অবস্থা ছিল শোচনীয় ৷ প্রায় 2 সপ্তাহ ধরে মুখ বেঁধে রাখা ছিল ইনসুলেশন টেপ দিয়ে ৷ মুখ বেঁধে করা হয়েছিল অত্যাচার ৷ ত্রিশূর জেলার ওল্লুরের ঘটনা ৷ তবে, বর্তমানে কুকুরটিকে উদ্ধার করে আবাসিক হোমে পাঠানো হয়েছে ৷
সম্প্রতি, কেরালায় অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে আনারসে বাজি মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে । আর কিছু না বুঝেই তা খেয়ে মৃত্যু হয় সন্তানসহ হাতিটির । এবার কেরালার এই কুকুরের অত্যাচারের খবরে সরব পশুপ্রেমীরা ।
দু'দিন আগে ওই অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার সংস্থাটিতে ফোন মারফৎ খবর আসে মুখে টেপ বাঁধা একটি কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে ওল্লুরের স্থানীয় লোকালয়ে ৷ এরপরই ওই সংস্থাটি কুকুরটিকে উদ্ধার করতে যায় ৷ এরপর PAWS নামের ওই সংস্থাটির সদস্যরা বেশ কয়েকদিন ধরে কুকুরটিকে খুঁজতে থাকে ৷ PAWS - এর সেক্রেটারি রামচন্দ্রন সংবাদমাধ্যমকে জানায়, " ওই কুকুরটিতে যখন উদ্ধার করা হয় তখন তার মুখে শক্ত করে বাঁধা ছিল টেপ ৷ সেটি এতটাই শক্ত ছিল যে তার চামড়া ভেদ করে হাড় পর্যন্ত চলে গেছিল ৷ তার নাকের হাড় অবধি দেখা যাচ্ছিল ৷ আমরা প্রথমে ভাবি টেপটি হয়তো একটা স্তরে প্যাঁচানো ৷ কিন্তু টেপটি খুলতে গিয়ে দেখা যায় প্রায় কয়েক স্তর প্যাঁচানো ছিল টেপটি ৷ আমরা টেপটি খোলার পর কুকুরটি প্রায় 2 লিটার জল একবারে খেয়ে নেয় ৷ কারণ কুকুরটি প্রায় 2 সপ্তাহ জল কিংবা খাবার কিছু না খেয়ে ছিল ৷ কুকুরটিকে এরপর অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় ৷ যদিও কুকুরেরা কয়েক সপ্তাহ না খেয়েও থাকতে পারে ৷ তবে এই কুকুরটি অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে ৷ "
রামচন্দ্রন আরও বলেন, " কুকুরটি নিশ্চই কারও পোষ্য ছিল ৷ কারণ তার গলায় কলার ছিল ৷ তবে, অনুমান ওই কুকুরটি বেশি ডাকার জন্যই হয়তো তার মুখ ওইভাবে বেঁধে দেওয়া হয় ৷ " PAWS সংস্থাটি প্রায় 11 টি পশু ক্যাম্প চালায় ৷ দেখাশোনা করে প্রায় 2 হাজারটি রাস্তার কুকুরের ৷ গত 7 বছরে প্রায় কয়েক হাজার পশু উদ্ধার করেছে এই সংস্থাটি ৷
কুকুর, বিড়ালের লেজে বাজি বেঁধে দেওয়া, পশুদের মারা কোনও নতুন বিষয় নয় ৷ পশুদের উপর অত্যাচারের একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে এতদিন । পশু অত্যাচার রুখতে হাজারো আইন, সচেতনতার প্রচার চললেও সমাজের এক শ্রেণির মানসিকতায় কোনও পরিবর্তন হয়নি । আজও মানুষের অমানবিক আচরণে লজ্জায় মুখ ঢাকতে হয় মানুষকেই ৷