পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

রক্তের নমুনায় লুকিয়ে কোরোনা উপসর্গের ভিন্নতা

কোরোনা রোগী চিহ্নিতকরণ এবং তাদের শারীরিক অবস্থা নির্ণয়ে রক্তের প্লাজমায় উপলব্ধ প্রোটিন সাহায্য করতে পারে।

Coronavirus
Coronavirus

By

Published : Jun 8, 2020, 4:21 PM IST

লন্ডন, 8 জুন : কোরোনা আক্রান্তদের রক্তে মিশ্রিত প্রোটিনই রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানাবে। গবেষকরা কোরোনা আক্রান্তদের রক্তের স্যাম্পলে প্রোটিন চিহ্নিত করেছেন, যা রোগের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য জানাবে।

ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, নভেল কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণে প্রত্যেকটি মানুষ ভিন্ন ভিন্ন সাড়া দিচ্ছে। যেখানে কিছু মানুষের কোনও উপসর্গই দেখা যাচ্ছে না, সেখানেই আবার বহু মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এবং মারাও যাচ্ছেন।

জার্নাল সেল সিস্টেমে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গবেষকেরা কোভিড -19 আক্রান্তদের প্লাজমা সংগ্রহ করেছেন 'বায়ো মার্কার' হিসেবে, যা রোগের গতিবিধি এবং কতটা গুরুতর হয়ে উঠতে পারে, সেই সম্পর্কে জানাবে।

ইংল্যান্ডের ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের গবেষক মার্কাস রালসের নেতৃত্বে গবেষকের দল বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে কোভিড -19 আক্রান্তদের রক্তের স্যাম্পলে প্লাজমায় বিভিন্ন প্রোটিনের স্তর নিয়ে গবেষণা করেছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, কোভিড -19 আক্রান্তদের রক্তের প্লাজমায় বিভিন্ন প্রোটিন বায়ো মার্কার রোগের গুরুতর হওয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। দেখা যায়, 27 টি প্রোটিনের পরিমাণ সংখ্যা, সংক্রমণ কতটা গুরুতর তার উপর নির্ভর করে বেড়েছে বা কমেছে।

রালসের জানান, " গবেষকরা আরও 17 জন কোভিড-19 রোগীর এবং 15 জন সুস্থ মানুষের গ্রুপের নমুনাগুলি বিশ্লেষণ করে এই মলিকিউলার সিগনেচারগুলিকে বৈধতা দিয়েছেন । এই প্রোটিন সিগনেচারগুলি ব্যবহার করে, বিজ্ঞানীরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড -19 এর কোডিং মানদণ্ড অনুযায়ী রোগীদের যথাযথভাবে শ্রেণিবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত এই ফলাফল দুটি পৃথক কাজে ব্যবহার করা সম্ভব । ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ব্যবহারগুলির মধ্যে একটি সম্ভাব্য রোগ নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হবে। "

তিনি বলেন যে, প্রাথমিক রক্ত ​​পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা কোভিড -19 আক্রান্ত কোনও রোগী ভবিষ্যতে গুরুতর লক্ষণ প্রকাশ করতে পারে কিনা, সেই বিষয়ে জানতে পারবেন।

বিজ্ঞানীদের মতে, এই খোঁজ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে। চিকিৎসকেরা যত দ্রুত রোগীর লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারবেন, তত ভালো চিকিৎসা এবং যত্ন দিতে পারবেন। দ্বিতীয় ভবিষ্যৎ ব্যবহার টি হল, হাসপাতালে ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা। রোগী নিজের শারীরিক অবস্থা যাই বর্ণনা করুক না কেন, এই পরীক্ষায় তার শারীরিক অবস্থার চিত্রটি উঠে আসবে।

রালসের বলেন, কিছু ক্ষেত্রে, রোগীর কোন উপসর্গ দেখা না দেওয়ায় তার স্বাস্থ্যের সঠিক চিত্রটি পাওয়া যায় না। বায়োমার্কার প্রোফাইলের উপর ভিত্তি করে অবস্থা নির্ণয়ে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই নতুন পদ্ধতি আরও বেশি সংখ্যক রোগীদের উপর পরীক্ষা করা হোক, যাতে রোগ নির্ণয়ের একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ওই 27 টি প্রোটিনের মধ্যে অনেকগুলিই আগে রোগ প্রতিরোধের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল না। যদিও গবেষকরা চিহ্নিত বায়োমার্কারগুলিতে ক্লোটিং ফ্যাক্টর এবং প্রদাহের নিয়ন্ত্রকও অন্তর্ভুক্ত করেছেন। গবেষকদের মতে, বেশ কিছু প্রোটিন এক সেল থেকে আরেক সেলে সিগন্যাল পাঠাতে সক্ষম, যাকে ইন্টারলিউকিন-6 (IL-6) বলা হয়। IL-6 এমন একটি প্রোটিন যা প্রদাহের সৃষ্টি করে এবং কোভিড -19 র গুরুতর লক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। গবেষকরা মনে করছেন, চিহ্নিত বায়োমার্কারগুলি চিকিৎসার জন্য সাহায্য করতে পারে।

গবেষকরা গবেষণাপত্র লিখেছেন, "চিহ্নিত প্রোটোমিক সিগনেচার এবং বায়োমার্কাররা ক্লিনিকাল সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সমর্থন করার জন্য রুটিন অ্যাসেসের পথ তৈরি করার পাশাপাশি সম্ভাব্য কোভিড-19 থেরাপিউটিক লক্ষ্যগুলি চিহ্নিতকরণ সম্পর্কে অনুমান করতে সাহায্য করে। "

ABOUT THE AUTHOR

...view details