হায়দরাবাদ, 26 ডিসেম্বর : প্লাস্টিকজাত বর্জ্য থেকে দেশকে মুক্ত করার লড়াইয়ে এবার শামিল হলেন হায়দরাবাদের সতীশ কুমার ৷ পেশায় মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়র তিনি ৷ প্লাস্টিকজাত বর্জ্য থেকে কীভাবে জ্বালানি তৈরি করা যায় সেই দিশাই এবার বাতলাচ্ছেন সতীশ ৷ এক বেসরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী 2050 সালের মধ্যে সমুদ্রে মাছের থেকে প্লাস্টিকের পরিমাণ বেশি থাকবে বলে আশঙ্কা ৷
প্লাস্টিকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে ভারতে নানা স্তরে মানুষ নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ৷ সতীশ কুমার তাদের মধ্যেই একজন ৷ যে সমস্ত প্লাস্টিক আর পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না, সেই সমস্ত প্লাস্টিক থেকেই জ্বালানি তৈরির কাজ করছেন তিনি ৷ সতীশ কুমার জানিয়েছেন, 500 কিলোগ্রাম অব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক থেকে 400 লিটার জ্বালানি তৈরি করা যায় ৷
ত্রিস্তরীয় রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতির মাধ্যমে প্লাস্টিককে একটি ভ্যাকুয়াম চেম্বারে তাপ দিয়ে ডিপলিমারাইজ়ড করে প্রথমে গ্যাসে ও পরে ঘনীভূত করে তরলে পরিণত করা হয় ৷ এই পদ্ধতির মাধ্যমে ডিজ়েল, বিমানের জ্বালানি ও পেট্রোলের সমতুল্য জ্বালানি তৈরি করা সম্ভব ৷ বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে জ্বালানিটি পেট্রোলের সমতুল্য হলেও গঠনগত দিক থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ৷
পাশাপাশি এই জ্বালানি প্রস্তুত করার পদ্ধতিও আলাদা ৷ এটি প্রস্তুতের জন্য কোনও চিমনির প্রয়োজন হয় না ৷ কোনও অবশিষ্টও পড়ে থাকে না ৷ যে গ্যাস প্রস্তুত করা হয় , তা জেনারেটরের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং কার্বনজাত বর্জ্য গাছের সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় ৷ আমাদের রোজকার জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার সবক্ষেত্রে ৷ যে সব জামাকাপড় আমরা পরি তার শতকরা 80 ভাগেই প্লাস্টিক থাকে ৷ আমরা যে কেক বা পেস্ট্রি খাচ্ছি, তার মোড়কেও প্লাস্টিক ৷ চিকিৎসা সামগ্রীর ক্ষেত্রেও প্লাস্টিকের ব্যবহার যথেষ্ট ৷ তবে সতীশ কুমার কিন্তু প্লাস্টিকের ব্যবহারে নিষেধ করছেন না ৷ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের বদলে বরং সচেতনভাবে প্লাস্টিক ব্যবহারের দিকেই নজর দিতে বলছেন তিনি ৷
সতীশ কুমার বলছেন, "প্লাস্টিক জ্বালানি ছাড়া আর কিছুই নয় ৷ যে পরিমাণ প্লাস্টিক পৃথিবীতে জমে আছে, ব্যবহার বন্ধ হলেও তার সমাধান করতে যুগ পেরিয়ে যাবে ৷" কাঁচ, ধাতব, কাগজ, প্লাস্টিক ও জৈব; পৃথিবীতে এই পাঁচ ধরনের বর্জ্যের সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করছেন সতীশ ৷ তাই শুধুমাত্র প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা বা ব্যবহার করলে জরিমানা করার পক্ষে নন তিনি ৷ বর্জ্যকে ব্যবহার করে তা কাজে লাগানোর পথে হাঁটতে বিশ্বাসী সতীশ কুমার ।