দিল্লি, 1 জানুয়ারি : ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তৈরি হল চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (CDS) নামে নতুন একটি পদ । 24 ডিসেম্বর এই পদটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার । CDS পদটির ক্ষমতা এবং সেনাবাহিনীর গঠনতন্ত্রে এর অবস্থান দেখে একে খুব সাবধানে অভ্যর্থনা জানাতেই হচ্ছে । এই বলিষ্ঠ পদক্ষেপ করার জন্য যাবতীয় কৃতিত্ব মোদী সরকারের প্রাপ্য হলেও ভুললে চলবে না, এই পদটি তৈরির কথা প্রথম ভাবা হয়েছিল 2001 সালে । এই পদটির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে, এর ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার এবং কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিপঙ্গুত্ব ।
CDS তৈরির সময় ভাবনায় ছিল মূলত কয়েকটি বিষয় । প্রথমত, প্রয়োজন ছিল তিন বাহিনীর সমন্বয় এবং একটা একমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার । দ্বিতীয়ত, দেশের অসামরিক শীর্ষপদগুলিতে কখনও বাহিনীর পরামর্শের প্রয়োজন হলে তা দেওয়া । CDS-কে প্রথম থেকে ভাবা হয়েছিল এক জন সুপার চিফ হিসেবে, যিনি বর্তমান তিন বাহিনীর সব পদের শীর্ষে থাকবেন । অনেকে আবার এই পদের জন্য ফাইভ স্টার স্টেটাসের দাবিও করেছিলেন । অন্য গণতন্ত্রে এই পদের চরিত্র বিচার করে দেখা হয়েছিল এবং ভারতে এর প্রয়োজন ও উপযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়েছিল ।
তবে, সবশেষে এই পদটি যে রূপ নিল, তা একেবারেই জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মোদী সরকারের ভারতীয় মডেলে তৈরি । CDS নিয়োগের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল, "তিন বাহিনী সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে ইনি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মুখ্য সেনা পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করবেন । তবে, আগের মতো তিন বাহিনীর প্রধান এখনও আলাদাভাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পরামর্শ দিতে পারবেন । তিন বাহিনীর প্রধান তো বটেই, CDS কোনওরকম সামরিক নির্দেশই দিতে পারবেন না । এমনকী, নিজে থেকে কোনও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নিরপেক্ষ পরামর্শও দিতে পারবেন না ।" অর্থাৎ CDS শুধুমাত্রই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মুখ্য পরামর্শদাতা এবং কোনওভাবেই তিন বাহিনীর একমাত্রিক যোগাযোগের মাধ্যম থাকলেন না । এরপর, CDS-এর মাথায় থাকবে দু’টি টুপি । একটি হল চিফস অব স্টাফ কমিটি(COSC)-র স্থায়ী চেয়ারম্যান, এবং দ্বিতীয়টি, প্রতিরক্ষামন্ত্রকে ডিপার্টমেন্ট অব মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স (DMA)-এর প্রধান এবং এর সচিব হিসেবে কাজ করা ।
CDS-এর বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা একেবারেই তিন বাহিনীর প্রধানের মতো হবে । তবে, প্রোটোকল অনুযায়ী তিনি তিন বাহিনীর থেকে উচ্চ পদে অবস্থান করবেন । CDS-এর প্রধান কাজ হিসেবে যেগুলির কথা বলা হয়েছে সেগুলি হল, অভিযান, পরিবহণ, প্রশিক্ষণ, সহায়ক পরিষেবা, যোগাযোগ, মেরামতির বিষয়ে বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো, বাহিনীর যে কোনও প্রয়োজনের বিষয় জানা ও পদক্ষেপ গ্রহণ, তিন বাহিনীর সমন্বয় সাধন করে দেশীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করা, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি জিনিসপত্রের ব্যবহার বাড়ানো সহ একাধিক ।