নয়াদিল্লি : ‘COVID-19’ প্যানডেমিক বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিকে মন্দার মুখে ফেলতে পারে । লকডাউনের প্রভাবে ব্যবসায় যে বাধা আসছে, তার ফলে প্রচুর সংস্থা, বিশেষত বিমান এবং পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত যারা, তারা সর্বস্বান্ত হয়ে যেতে পারে ।
ইতিমধ্যেই ভারতে বিমান পরিবহন, রেস্তরাঁ, হোটেল, MSME-গুলিতে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে । তবে সবচেয়ে জোরালো ধাক্কা খেয়েছে রপ্তানি ক্ষেত্র ।
এই প্যানডেমিকের ফলে বিশ্বব্যাপী পণ্যদ্রব্য রপ্তানি 50 বিলিয়ন ডলার হ্রাস পেতে পারে, পরিসংখ্যান পেশ করে এমনটাই জানানো হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের বাণিজ্য এবং উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে । ভারতের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় 348 মিলিয়ন ডলার । সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখে পড়তে চলেছে অ্যামেরিকা, ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া এবং চিনের সেই সব সংস্থা যারা আমদানিকৃত কাঁচামাল এবং রপ্তানি বাজারের উপর নির্ভরশীল ।
বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি:
বিশ্বজুড়ে সোনা এবং দামি ধাতুসমূহের দামে ক্রমশ পতন ঘটছে, কারণ লগ্নিকারীরা নগদ টাকা ব্যয় না করে নিজেদের কাছে তা গচ্ছিত রাখছেন । অনিশ্চিত সময়ে জমানো নগদ অর্থ ‘নিরাপদ স্বর্গের সমান’ । নগদের অভাবে এই সময়ে বিশ্বব্যাপী আর্থিক চালিকাশক্তিরূপে যারা চিহ্নিত, তারা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে যতদূর সম্ভব সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছেন ।
স্টক মার্কেটগুলিতে এই বিক্রিবাট্টায় ধস নামায় ওয়াল স্ট্রিটে একদশকব্যাপী ‘বুল রান’-এ ইতি টেনেছে । লগ্নিকারীরা শুধু যে এই পরিবর্তনশীল বাজার ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন তাই নয়, তাঁরা তেল, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’, সোনা, রুপো এবং সোয়াবিনের মতো পণ্য বিক্রি করে দিচ্ছেন আর পরির্বতে নগদের বিনিময়ে নিরাপদ আর্থিক আশ্রয় খুঁজছেন । এর ফলে অর্থনৈতিক বাজার আরও আঁটোসাঁটো হচ্ছে ।
সুতরাং, বিশ্বের প্রধান কিছু কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক যেমন অ্যামেরিকান ফেডারেল রিজার্ভ, দ্য ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ জাপান, ব্যাঙ্ক অফ কানাডা এবং সুইস ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক একজোট হয়ে বাজারে নগদ অর্থের জোগান বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছে, যাতে যথেষ্ট পরিমাণ নগদের উপস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সুষ্ঠু এবং সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে ।
2008 সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের সময় যেমনটা ঘটেছিল, ঠিক সেই পথ অনুসরণ করে ‘দ্য ফেড’ বাজারে নগদ অর্থের জোগানের সমস্যা মেটাতে ‘কোয়ান্টিটেটিভ ইসিং’ (QE)-এর নতুন রাউন্ড চালু করেছে ।