দিল্লি, 9 মার্চ : সমগ্র বিশ্বে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে কোরোনা ভাইরাস । এর আঁতুড়ঘর চিনের হুবেই প্রদেশে মৃতের সংখ্যা পাঁচশো ছুঁয়েছে । শুধুমাত্র চিনেই অন্তত 26,000 জনের ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে । কোরোনা যে মহামারির আকার ধারণ করেছে, ভারত-সহ বিশ্বের 26টি দেশে ইতিমধ্যেই তার প্রমাণ মিলেছে । ফিলিপিন্স এবং হংকংয়েও কোরোনায় মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এখনও এই রোগের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেনি । তবুও ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা দেখে পৃথিবীর কোনও দেশই রোগের সংক্রমণ এড়ানো নিয়ে এপর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারেনি । বলা হচ্ছে, সাপ এবং বাদুড় থেকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে । চিনের প্রেসিডেন্ট শি জ়িনপিং প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছেন যে, সরকার কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চিনে দশ হাজার শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে এবং সেখানকার 13টি শহরে চিকিৎসা সংক্রান্ত সব ধরনের পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে । ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে চার কোটিরও বেশি নাগরিকের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি করা রীতিমতো যুদ্ধকালীন তৎপরতার চেহারা নিয়েছে । ইতিমধ্যেই ইউহানে আটকে পড়া ভারতীয়দের আকাশপথে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে ভারত । সেই জায়গায় পাকিস্তান সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের নাগরিকরা চিনে পড়ে থাকবেন । WHO-র দাবি, এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করা তখনই সম্ভব, যখন বিশ্বের সব দেশ একজোট হয়ে কাজ করবে । কিন্তু, বিশ্বের সব দেশ কি আদৌ প্রস্তুত এই জরুরি অবস্থার সঙ্গে লড়াই করতে ? আখেরে বিশ্ব অর্থনীতির উপর বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে এই অবস্থা ।
কোরোনা ভাইরাসের জেরে বর্তমানে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা আমাদের সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম (SARS)-র কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে । 18 বছর আগে চিনকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল এই SARS । সেই সময় চিনে যে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, বেজিং তা প্রকাশ্যে আনতে চায়নি । কারণ তাতে দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হত । বর্তমান কোরোনা সংক্রমণ নিয়ে চিনে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে এমনও শোনা গেছে যে, এই রোগের প্রকোপ নাকি সেদেশে জৈব মারণাস্ত্র নিয়ে চলা গবেষণা ব্যর্থ হওয়ার ফল । তবে এই সমস্যার আসল কারণ আদৌ কখনও প্রকাশ্যে আসবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে । কানাডা, সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনাম SARS-এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ হয়েছে । কোরোনা সংকট প্রতিরোধে চিনও তার সর্বশেষ সম্পদ ব্যবহার করে শেষ পর্যন্ত লড়াই করছে । SARS-এ আক্রান্ত 8000 জনের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ছিল 800 । 2009 সালে সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত 2.5 লাখের মধ্যে অন্তত 3,000 জনের মৃত্যু হয়েছিল । শুধুমাত্র 2014 সালেই ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণে 7000 -এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল ।