পটনা, 2 জুন: ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা, নিয়ম মেনেই কোয়ারানটিন সেন্টারেও থাকতে বাধ্য হয়েছেন তারা। 14 দিনের সময়সীমা কাটিয়ে এবার ঘরে ফিরছেন অনেকে। হাজার হাজার পুরুষ ও মহিলা, যারা কোয়ারানটিন সেন্টার ছেড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন, তাদের বিহারের স্বাস্থ্য দপ্তর এর তরফ থেকে দেওয়া হচ্ছে ‘বিশেষ উপহার’।
তবে এই উপহার সবাইকে দেখানোর নয়, বরং গোপনে-ব্যক্তিগতভাবে যে কাজ হয়, তাকে গোপন রাখাই এর প্রধান উদ্দেশ্য। যৌন মিলনের সুবর্ণ সুযোগ হয়ে উঠেছে লকডাউন । দীর্ঘদিন ঘর বন্দী থাকায় মনোরঞ্জনের অন্যতম উপাদান হয়ে উঠেছে যৌন মিলনই। যার চূড়ান্ত ফল অনিয়ত্রিত গর্ভধারণ- জনসংখ্যা বৃদ্ধি । বর্তমান পরিস্থিতিতে যা কোনও মতেই খুব একটা কাম্য নয় ।
ভবিষ্যতে বাড়তি জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখেই বিহারের স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে নেওয়া হয়েছে অভিনব উদ্যোগ। কোয়ারানটিন সেন্টার থেকে যারাই বাড়ি ফিরছেন, তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কনডোম ও গর্ভনিরোধক বড়ি।
দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ জন্মহার বিহারে, প্রতি বছর মার্চ থেকে নভেম্বর-এই নয় মাসে বিহারে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে সন্তান জন্মানোর হার হু হু করে বাড়ে। কারণ মার্চ ও নভেম্বরে হোলি, ছট পুজো ও দিওয়ালি জন্য বাড়ি ফেরেন হাজার হাজার শ্রমিক। দুইয়ে দুইয়ে চার করে হিসেব বুঝতে পেরে বিহার সরকার এবার কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না। তাই আগেভাগেই হাতে ধরানো হচ্ছে কনডোম এবং গর্ভনিরোধক বড়ি।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনোজ কুমার বলেন, " প্রতি বছরই মার্চ থেকে নভেম্বরের এই কয়েকটি মাসে শিশু জন্মের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, পরবর্তী মাসগুলিতে তা ধীরে ধীরে কমে যায়। বিহারে সন্তান জন্মানোর হার সবচেয়ে বেশি। কনডোম ও গর্ভনিরোধক বড়ি বিলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। "
লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়ে ও অর্থাভাবে লাখ লাখ শ্রমিক ফিরে এসেছেন রাজ্যে। ইতিমধ্যেই শ্রমিক স্পেশালে চেপে বিহারে ফিরেছেন 22 লাখ শ্রমিক। এছাড়া বিহার সরকারের হিসেব অনুযায়ী পায়ে হেঁটে ও গাড়িতে করে প্রায় 10 লাখ শ্রমিক ফিরেছেন রাজ্যে।
লকডাউনের মাঝে লাখ লাখ শ্রমিক ফেরায় এক ধাক্কায় অনেকটাই জনসংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সরকারের। সেই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করতেই কোয়ারানটিন সেন্টার থেকে মুক্তি পাওয়া সকলের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কনডোম ও গর্ভনিরোধক বড়ি।