চিনুক ৷ যে কোনও সমস্যায় ভারতীয় বায়ুসেনার ভরসা এই অ্যাডভান্সড মাল্টি-মিশন হেলিকপ্টার ৷ জওয়ানদের একস্থান থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হেলিকপ্টারে উদ্ধার অভিযান, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা, বিপর্যয় মোকাবিলা... সব ধরনের কাজের জন্য তৈরি চিনুক ৷ অ্যামেরিকান উড়ান প্রস্তুতকারী সংস্থা বোয়িং এই হেলিকপ্টারের নকশা তৈরি করেছে ৷ 2015 সালে বোয়িংকে 15 টি চিনুক হেলিকপ্টারের বরাত দিয়েছিল ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রক ৷ 2019 সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কনসাইনমেন্টটি এসে পৌঁছায় ভারতে ৷ সেই থেকেই ভারতীয় বায়ুসেনার সেবায় নিয়োজিত রয়েছে চিনুক ৷
চিনুকের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, এটি একটি ভার্টিকাল লিফট প্ল্যাটফর্ম হেলিকপ্টার । জওয়ানদের পাশাপাশি কামান, অন্যান্য সরঞ্জাম ও জ্বালানি নিয়ে যাওয়ার জন্য চিনুক অত্যন্ত কার্যকরী । এছাড়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতেও এই হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয় । 10 হাজার 886 কেজি ওজন বহন করতে সক্ষম চিনুক ৷ এতে একসঙ্গে 33-55 জন জওয়ান অথবা 24 টি স্ট্রেচার ও তিন জন অ্যাটেন্ড্যান্ট যেতে পারেন ৷
চিনুক হেলিকপ্টারের বৈশিষ্ট ঘণ্টায় প্রায় 310 কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে চিনুক ৷ একবার তেল ভরলে 740 কিলোমিটার যাত্রা করতে পারে এই হেলিকপ্টার ৷ হেলিকপ্টারে রয়েছে একাধিক প্রযুক্তিগত সুবিধা ৷ অত্যাধুনিক ককপিট ৷ রয়েছে ডিজিটাল অ্যাডভান্সড ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম, ডিজিটাল ককপিট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও কমন অ্যাভিয়েশন আর্কিটেকচার ককপিট ৷ এছাড়াও রয়েছে নাইট ভিশন মোড ৷ খুব কম সময়ে জওয়ানদের একস্থান থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর এই হেলিকপ্টার ৷ এতে তিনটি মাঝারি ধরনের মেশিন গান রয়েছে ৷
ভারতের বায়ুসেনার প্রাক্তন প্রধান বি এস ধানোয়া এই হেলিকপ্টারকে ন্যাশনাল অ্যাসেট বলে আখ্যা দিয়েছেন ৷
সম্প্রতি ভারত-চিন সীমান্তে সংঘাতের পরিস্থিতির মধ্যেও বিশেষ ভূমিকায় দেখা গেছে চিনুককে ৷ সীমান্ত সংঘাতের পরবর্তী সময়ে রাতের আকাশে টহল দিতে দেখা গেছিল ভারতীয় বায়ুসেনার চিনুক হেলিকপ্টারকে ৷ লাদাখের ওই হিমশীতল উচ্চতায় শত্রুপক্ষের গতিবিধির উপর নজর রাখতে খুবই কার্যকর ভূমিকা নিয়েছিল এই হেলিকপ্টার ৷ লাদাখের সীমান্ত বরাবর ফরওয়ার্ড বেসগুলিতেও চিনুককে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল বলে একাধিক খবর সামনে এসেছিল ৷