পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

গালওয়ান নিয়ে চিনের দাবি নতুন নয়

পুরো গালওয়ান উপত্যকা নিয়ে চিনের দাবি একেবারে নতুন নয় এবং এই এলাকার পূর্ববর্তী মানচিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ৷ এমনটাই জানিয়েছেন কৌশলগত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম টেলর ফ্র্যাভেল ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশিষ্ট সাংবাদিক স্মিতা শর্মাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ফ্র্যাভেল নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে যেহেতু দুই পক্ষকেই প্রথমে যা ছিল, সেই বিষয়ে সহমত হতে হবে, তাই পুরো স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনা বোধহয় সম্ভব নয় ৷

galwan
galwan

By

Published : Jul 12, 2020, 4:55 PM IST

‘স্থিতাবস্থা কোথাও পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা যাবে কি না তা পরিষ্কার নয়’

পুরো গালওয়ান উপত্যকা নিয়ে চিনের দাবি একেবারে নতুন নয় এবং এই এলাকার পূর্ববর্তী মানচিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ৷ এমনটাই জানিয়েছেন কৌশলগত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম টেলর ফ্র্যাভেল ৷ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আর্থার ও রাউথ স্লোয়ান অধ্যাপক এবং ম্যাসাচুসেটের ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সিকিউরিটি স্টাডিজ় প্রোগ্রামের ডিরেক্টর অধ্যাপক ফ্র্যাভেল জানান যে, গালওয়ান নিয়ে বেজিংয়ের দাবি বরাবর মোহনা বা নদীর বাঁক নির্ভর আর এটা পুরোটাই মানচিত্রের উপর ভিত্তি করে ৷ চিনা সরকারের সূত্র থেকে এটা চিহ্নিত করেছে ৷ ভারতের সঙ্গে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও যা পরিবর্তিত হয়নি ৷ যদিও তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন যে চিন তাদের দাবির স্বপক্ষে ওই এলাকায় আগে যে ধরনের গতিবিধি করত, তার সঙ্গে এখন কার্যকলাপই হল আসল পার্থক্য ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশিষ্ট সাংবাদিক স্মিতা শর্মাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ফ্র্যাভেল নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে যেহেতু দুই পক্ষকেই প্রথমে যা ছিল, সেই বিষয়ে সহমত হতে হবে, তাই পুরো স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনা বোধহয় সম্ভব নয় ৷ ভারতের সমর্থনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতি নিয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ফ্র্যাভেল জানান যে, সীমান্ত পরিস্থিতি যদি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, সেক্ষত্রে আমেরিকা ঠিক কতটা মাথা ঘামাবে, তা এখনও নিশ্চিত নয় ৷ আর ভারতকেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা ওয়াশিংটন DC-র কাছাকাছি থাকবে কি না ৷

চিনের বিদেশ ও নিরাপত্তা নীতির উপর স্কলার অধ্যাপক ফ্র্যাভেল ‘অ্যাক্টিভ ডিফেন্স: চায়না’স মিলিটারি স্ট্র্যাটেজি সিন্স ১৯৪৯’ বইটির লেখক ৷ চিনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক এবং ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রেক্ষিতে এই বিবাদ নিয়ে তাদের ভূমিকার বিষয়ে ফ্র্যাভেল মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, যখন বড় শক্তিধর দেশগুলি নিজেদের মধ্যে লড়াই করে, আর সেই দেশগুলির সঙ্গে যদি রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে, সেক্ষেত্রে তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা নেয় ৷ ইতিহাস অন্তত তাই বলছে ৷ অধ্যাপক ফ্র্যাভেল বিশ্বাস করেন যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক জটিলতর এবং খারাপ হচ্ছে ৷ তাই এই পরিস্থিতিতে তারা ভারতের সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না ৷ তাই চিন মীমাংসায় রাস্তায় হাঁটল ৷ দিল্লিকে ব্যতিব্যস্ত করার জন্য ভুটান ও নেপালের মতো প্রতিবেশীদের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে চিন ৷ ভারতকে এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে ৷

ধীরে ধীরে সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ভারত ও চিন এখন উত্তেজনা প্রশমন করার চেষ্টা করছে ৷ ১৪, ১৫ ও ১৭ নম্বর টহল দেওয়ার জায়গায় ইতিমধ্যেই এই কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ৷ প্যাংগং সো পরবর্তী এলাকা যেখানে সকলের নজর রয়েছে ৷ রাজনৈতিক আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ দুই জন SR (বিশেষ প্রতিনিধি) নিজেদের মধ্যে কথা বলেছেন ৷ প্রথম যে জায়গায় আক্রমণের ঘটনা ঘটে, তা নিয়ে আপনার মত কী ?

এটার উত্তর দেওয়া সহজ নয় ৷ কারণ, কিছুটা হলেও আমাদের ভরসা করতে হচ্ছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের উপর ৷ যা সরকারের বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসছে ৷ আর কিছু লোক উপগ্রহ চিত্র থেকে দেখে কিছু অবস্থান নিচ্ছে ৷ এর সঙ্গে আরও জটিলতা যেটা তৈরি হচ্ছে, তা হল যদি LAC (প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা)-কে মূল সীমান্ত হিসেবে ধরে বিচার করি, তাহলে চিন কি ভারতের অঞ্চলের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল, নাকি ঢুকে পড়েনি ৷ অথবা চিনের দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত কি তাদের এলাকায় ঢুকে পড়েছিল ৷ কিন্তু আমরা যখন ভারসাম্যের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তখন বাস্তবের জমিতে আসলে কোনও LAC নেই ৷ কিন্তু গালওয়ান উপত্যকা, হট স্প্রিং, প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন অন্তত তিনটি জায়গায় বা তার বেশিও হতে পারে, যেখানে চিনের দৃষ্টিকোণ থেকে যেটা LAC বলে বিবেচিত, তারা সেই পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে ৷ তিনটের মধ্যে হয়তো দুইটি জায়গায় চিন এমন স্থানে চলে আসে, যা ভারত মনে করে তাদের LAC-এর ভিতরে ৷ প্যাংগ্যাং হ্রদের ফিঙ্গার ৪ ও ফিঙ্গার ৮-এর মধ্যে প্রচুর অস্বচ্ছতা রয়েছে ৷ যখন ভারত ফিঙ্গার ৮-কে LAC বলে মনে করে, তখন চিনের দৃষ্টিকোণ থেকে LAC হল ফিঙ্গার ৪ ৷ গালওয়ান উপত্যকায় বিষয়টি আরও কিছুটা জটিল ৷ কিন্তু শ্যামের সঙ্গে মিশে যাওয়ার আগে গালওয়ান নদীতে যে বাঁক আছে, তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে ৷ ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি সম্ভবত এই বাঁক থেকে দক্ষিণ পূর্বে আরও এক কিলোমিটার আগে LAC অবস্থিত ৷ আর চিনের দৃষ্টিভঙ্গি কম-বেশি ওই বাঁকের উপর নির্ভর করে দাঁড়িয়ে আছে ৷ আপনারা ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখে মনে করছে যে চিন ওই এলাকায় প্রবেশ করেছে ৷ চিন যেহেতু মিডিয়া নিয়ে অনেক বেশি বিধিনিষেধ আরোপ করে, কী হয়েছিল, তা খুঁজে বের করা বেশ কঠিন ৷ কিন্তু আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, যে চিন ততটাই এসেছিল, যে জায়গায় তারা LAC রয়েছে বলে মনে করে ৷

গালওয়ান নিয়ে চিন কোনও নতুন দাবি করছে না

গালওয়ানের সার্বভৌমত্ব নিয়ে চিনের দাবি সম্পর্কে আপনার মতামত কী ? চিনের প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনে থেকে কমন জিওস্প্যাটিয়াল ইনফরমেশন সার্ভিস নামে একটি জাতীয় মঞ্চের সূত্র থেকে একটি মানচিত্র পাওয়া গিয়েছে ৷ এই বিষয়টিকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন ?

সর্বশেষ মানচিত্রের ভিত্তিতে চিন যে দাবি করছে, তাতে আমি যেটুকু চিহ্নিত করতে পেরেছি, সেখানে গালওয়ান উপত্যকা নিয়ে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি ৷ এটাই আমার বিশ্লেষণ ৷ গালওয়ান নদী যেখানে বাঁক নিয়েছে সেখানে বা তার উপরে গালওয়ান উপত্যকার অধিকাংশ অংশকেই চিন নিজের বলে দাবি করে ৷ শায়োক নদীর সঙ্গে মিশে যাওয়ার জন্য পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হওয়ার যে জায়গা, এই শেষ পাঁচ কিলোমিটার বাদ দিয়ে ৷ তবে গালওয়ান উপত্যকার বাকি অংশ চিন সবসময় নিজেদের দাবি করে এসেছে । বর্তমানে তৈরি হওয়া উত্তেজনার জন্য যে এলাকা সকলের নজরে রয়েছে, তার থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গালওয়ান উপত্যকার যে বিভিন্ন অংশ রয়েছে, তা ১৯৬২ সালের যুদ্ধের সময় স্পষ্টভাবে চিত্রিত হয়েছিল ৷ চিন সরকারের ওয়েবসাইট থেকে যে মানচিত্রটিকে আমি চিহ্নিত করতে পেরেছি, তাতে চিনের দাবি গালওয়ান নদী যেখানে বাঁক নিয়েছে তার উপরের পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত ৷ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল ওই মানচিত্রে দুইটি চিনা অক্ষর রয়েছে ৷ অনুবাদ করলে যার অর্থ হয় মোহনা বা নদীর মুখ ৷ আপনি যদি চিনের বিবৃতির দিকে নজর দেন, তাহলে দেখবেন যে তারা মোহনা শব্দটির উপর অনেক বেশি জোর দিয়েছে ৷ তাই যখন চিন গালওয়ান উপত্যকা বলে আর ভারত গালওয়ান উপত্যকা বলে, তখন তারা কী একই জায়গার কথা বলে, এ নিয়ে আমি নিশ্চিত নই ৷ আর এটাই ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করে ৷

গালওয়ান নিয়ে চিনের দাবি কি নতুন নাকি কৌশলগত পদক্ষেপের পরিবর্তন ৷ এতে আপনার বিশ্লেষণ কী ?

চিনের দাবিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি ৷ এটা পশ্চিমে শায়োক পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার গিয়েছে ৷ তারা বাঁকের উপরে দাঁড়িয়ে আছে ৷ ওই অঞ্চলে চিনের উপস্থিতি নিয়ে একটি আলাদা প্রশ্ন রয়েছে ৷ তাদের দাবির জন্য চিন কত ঘন ঘন টহল দিয়েছে, সেটাও আমার কাছে স্পষ্ট নয় ৷ অনেক ভারতীয় রিপোর্ট ইঙ্গিত দিয়েছে চিনের উপস্থিতি নতুন এবং এটা খুবই উদ্বেগজনক । সুতরাং মানচিত্রে যে দাবি করা হয়েছে আর সেই দাবির জন্য কার্যকলাপের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতেই হবে ৷ তবে আমি মনে করি যে চিনের বিবৃতি, তাদের মানচিত্র এবং আরও কিছু বিষয় থেকে পরিষ্কার যে তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে গালওয়ান উপত্যকা মানে যেখানে নদী বাঁক নিচ্ছে ৷ আর তার থেকে আর প্রসারিত হয় না ৷ এটা তাদের অন্য বিবৃতি থেকেই বোঝা যায় ৷ বিশেষ করে জুন মাসের ছয় তারিখের বিবৃতিটি, যাতে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি ছিল, তা থেকে বোঝা যায় ৷ যেটা কার্যত ভেস্তে যায় ৷ চিন জানিয়েছিল যে, দুই পক্ষই মোহনা বা নদী মুখের দুই পারে আউট পোস্ট তৈরি করার বিষয়ে সহমত হয়েছে ৷ নদীর বাঁক, যেখানে এখন সেনা প্রত্যাহারের কাজ চলছে, সেখানে যা হচ্ছে, তা থেকেও এটা বোঝা সম্ভব ৷ নদী বরাবর এক কিলোমিটার এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছিল ৷ কারণ, ভারত মনে করে LAC আরও এক কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ৷ যে এলাকাকে চিন তাদের এলাকা বলে মনে করে ৷

গালওয়ানে হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বদলীয় বৈঠকের পর প্রাথমিক ভাবে টেলিভিশনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া এবং এই অবস্থানকে চিনের খণ্ডন করার চেষ্টা, আপনার কি মনে হয় এই বিবৃতিগুলি ক্ষতি করেছে বা বেশ কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করেছে ?

এর জন্য ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল ৷ যেটা ঘটনা, তার উপর প্রভাব তৈরি করেছিল ৷ অথচ যা ঘটছিল, তার মুখ্য ভূমিকায় ছিল LAC ৷ আমরা জানি না যে ঠিক কী পরিস্থিতি রয়েছে ৷ এবার আমাদের অঞ্চল লঙ্ঘিত হয়েছিল কি না এই নিয়ে আমরা যদি কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে যাই, তাহলে বিচার করার আগে জানতে হবে আসলে রেখাটা কোথায় ছিল ৷ কিন্তু চিন কখনওই বাঁক ছাড়িয়ে এগিয়ে যায়নি এবং এটাই তাদের দাবি ৷ সুতরাং কেউ কেউ সত্যি সত্যি এটা বুঝতে পারবেন যে প্রধানমন্ত্রী ঠিক কী বলেছিলেন ৷ কিন্তু অন্য একটি দিক থেকে এর ফলে চিনের কূটনীতিক ও অন্যান্যদের জন্য আলোচনায় কিছু কার্যকরী পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছিল ৷ দুই রাত আগে CCTN-এ একটি অনুষ্ঠানে আধঘণ্টার একটি আলোচনা হয় ৷ যে অনুষ্ঠানের নাম ট্যুডেজ় ফোকাস ৷ পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে সেখানে একটি ক্লিপ দেখানো হয় এবং চিন যে ভারতের অঞ্চল লঙ্ঘন করেনি, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সেই অংশ সেখানে ব্যবহার করা হয় ৷ তারা এটা বোঝাতে চেয়েছিল যে তারা তাদের দাবি মতো এলাকা থেকে একটুও সরেনি ৷

বাফার জোন সম্পর্কে বিভ্রান্তি রয়েছে বলে মনে হচ্ছে - যদি তা পরিবর্তন করা হয় বা ভারত কি হেরে গেল ?

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে আমি বুঝতে পারছি যে দুই পক্ষই দেড় কিলোমিটার করে পিছিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সহমত হয়েছে ৷ কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, তারা কোথা থেকে পিছিয়ে আসছে ৷ তারা কি ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে যেখানে LAC, সেখানে পিছচ্ছে ৷ নাকি অন্তত গালওয়ান উপত্যকার সাপেক্ষে চিনের অবস্থান থেকে পিছচ্ছে ৷ ভারত হয়তো ভেবে দেখবে যে এর থেকে পিছিয়ে গেলে LAC থেকে কতটা দূরে সরে যাচ্ছে ৷ কিন্তু বাফার জোনের ধারণাটি খুব ভালো ৷ এটা স্পষ্ট যে এর আগে কার্যকর করা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া ভেস্তে গিয়েছিল, তার কারণ দুই পক্ষের সেনাবাহিনী খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল ৷ কার কোথায় থাকা উচিত, তা নিয়ে একটা বিভ্রান্তি রয়েছে ৷ সঠিক বিবরণগুলি সম্পূর্ণ রূপে বোঝা খুবই কঠিন ৷ তাই দুই পারের মোটামুটি তিন কিলোমিটার ছেড়ে নজরদারি চালালে কিছু কৌশলগত জায়গা তৈরি হবে বলে আশা করা যায় ৷ সেক্ষেত্রে কূটনৈতিক বা রাজনৈতিক স্তরে সমস্যা সমাধানের সুযোগ থাকে ৷

যখন দুই জন SR নিজেদের মধ্যে কথা বললেন, তখনও ভারত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার উপর জোর দিল ৷ আর চিন নিজেদের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের উপর স্থির রইল এবং গালওয়ানের হিংসার জন্য ভারতীয় সেনা জওয়ানদের দোষী করল ৷ প্রাক্তন NSA এসএস মেনন জানিয়েছেন যে বিবৃতিতে স্থিতাবস্থা ফেরানোর বিষয়টি অনুপস্থিত ছিল ৷ এটা কি কোনও ভয়ের বিষয় এবং এপ্রিল যে পরিস্থিতি ছিল সেই স্থিতাবস্থায় পৌঁছতে কতটা সময় লাগবে ৷

এটা আমার কাছে পরিষ্কার নয় যে, স্থিতাবস্থা পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে কি না । একই সঙ্গে এটাও স্পষ্ট নয় যে আগে সম্পূর্ণ স্থিতাবস্থা বলতে কেমন পরিস্থিতি ছিল ৷ প্যাংগং এলাকায় এটা আরও স্পষ্ট ৷ সেখানে ফিঙ্গার ৪ স্থায়ী ভাবে দখল করতে চাইছে চিন এবং পরিকাঠামো নির্মাণ করতে চাইছে ৷ সুতরাং, স্থিতাবস্থা মানে ওই পরিকাঠামো সরিয়ে দেওয়া এবং চিনের তরফে তাদের উপস্থিতি সরিয়ে নেওয়া ৷ গালওয়ান উপত্যকায় স্থিতাবস্থা মানে চিন যেভাবে নজরদারির কাজ চালাচ্ছিল, সেটা তারা আর করবে না অথবা এর মানে কি এটা যে ভারত যে এলাকাকে LAC বলছে, সেটা সেখানেই থাকছে ৷ আপনি যদি স্থিতাবস্থা ফেরানোর দিকেই নজর দেন, তাহলে এটা স্পষ্ট হওয়া উচিত যে কী পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে ৷ এটা এমন কিছু একটা হওয়া উচিত, যেখানে দুই পক্ষই সহমত পোষণ করছে ৷ আর এটাই বিবৃতিতে ছিল না ৷ কিন্তু এটা যে কেউ বুঝতে পারবেন যে সেনা সরিয়ে আসলে নতুন করে উত্তেজনা যাতে তৈরি না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে আপনার প্রথম ও একমাত্র কী চাই সেই দিকে নজর দিচ্ছেন না ৷ চিনের বিবৃতিতে পরিস্থিতির ঠিক ও ভুল দিকগুলিকে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ তবে আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে চিন নিজেদের দাবির সত্যতা খুব সুন্দর ভাবে স্বীকার করে নিয়েছে ৷ কিন্তু বাকি বিবৃতিতে এই সব কিছু হওয়ার আগে ভারত ও চিনের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল, তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে ৷ উন্নয়ন এবং পুনরুজ্জীবনের পথে এক সঙ্গে কাজ করার কথা বলে তারা বুঝিয়েছে যে আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে ৷ আমি এটাকে একেবারে নিম্নমানের আলোচনা বলে উড়িয়ে দিতে পারছি না ৷ এই বিষয়টিকে চিন যে আর টেনে নিয়ে যেতে চায় না, এই ইঙ্গিত স্পষ্ট পাওয়া গিয়েছে ৷ কারণ, তারা বুঝতে পেরেছে যে এর ফলে ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও খারাপ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে ৷ আর এই ঝুঁকি এমন একটা সময় তৈরি হয়েছে, যখন তাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে ৷

মার্কিন বিদেশ সচিব পম্পেও বলেছেন যে, তিনি বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে চিনের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের অবনতির বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে ৷ যদি পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, তাহলে বিবৃতির বাইরে বেরিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সমস্যায় কতটা জড়িয়ে পড়তে চাইবে ?

গত ছয় মাসে বিদেশ সচিব চিনের উপর যে মনোনিবেশ করেছেন এবং আরও বিস্তৃত ভাবে চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত প্রতিযোগিতার প্রেক্ষিতে এটা একেবারেই বিস্ময়কর নয় যে তিনি ভারতের পক্ষে কথা বলেছেন ৷ কিন্তু আসল প্রশ্ন হল এতে চিনের সঙ্গে পরিস্থিতি যদি আরও উত্তপ্ত হয়, তাহলে আমেরিকার আচরণে কি কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে অথবা ভারতকে সমর্থন করবে ৷ এটা নিয়ে আমি নিশ্চিত নই ৷ ভারত বা অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে চিনা আগ্রাসন বা খারাপ ব্যবহার নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করে বিদেশ সচিবের জন্য খুবই সহজ ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঠিক কতটা পরিমাণ জড়িয়ে পড়বে, তা একাধিক ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করছে ৷ প্রথমত, সীমান্তে উত্তেজনার মাত্রা কতটা ৷ দ্বিতীয়ত, ভারত আমেরিকা এই বিষয়ে জড়িয়ে পড়ুক, এটা কতটা চাইছে ৷ এখন ভারতকে খুব সতর্ক ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷ অন্তত পক্ষে ট্রাম্প প্রশাসনে এবং কৌশলগত প্রতিযোগিতায় জোর দিতে হবে ৷ যা অনেকে দেখে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের কৌশলগত লড়াইয়ে জেরে সম্পর্ক খুবই দ্রুত তলানিতে পৌঁছেছে ৷ তাই ভারতকে আগে নিজেদেরই প্রশ্ন করতে হবে, যে তারা চিনের প্রতি আমেরিকার এই মনোভাবের সঙ্গী হতে চায় না কি না ৷ আমেরিকা যদি ভারতকে অনেক বড় সাহায্য করতে চায়, তাহলে এটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ কোন পদক্ষেপ ভারতের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী হবে, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া একেবারেই সহজ নয় ৷ কিন্তু এটা স্পষ্ট যে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একে অপেরর মধ্যে সম্পর্ক আরও উন্নত করার রাস্তা খুলে গিয়েছে ৷ তাহলে সেক্ষেত্রে চিনের বিরুদ্ধে যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেখানে এক সঙ্গে নজর দেওয়া যাবে ৷ আর যদি সীমান্তে নতুন করে আর উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুলে যাবে ৷

বিজয় দিবস প্যারেডে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মস্কো গিয়েছিলেন ৷ ভারত নতুন অস্ত্র রাশিয়ার থেকে নেওয়ার বরাত দিয়েছে ৷ চিনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের প্রেক্ষিতে ভারত-চিন দ্বন্দ্ব নিয়ে তারা কী ভূমিকা নিতে পারে বলে আপনার মনে হয় ? এবং CAATSA-র অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ছায়ায় কি ভারত S400 কিনতে পারবে ?

প্রতিরক্ষার দিক থেকে রাশিয়া হল ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ৷ কারণ, এরাই ভারতের অত্যাধুনিক অস্ত্র সম্ভারের অধিকাংশের উৎস ৷ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ফাইটার এয়ারক্রাফট এবং এই ধরনের অন্য অনেক কিছু যা এখন ভারত-চিন সীমান্তে প্রাসঙ্গিক, তাও ওখান থেকে আসে ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্য যে জায়গাগুলিতে সাহায্য করছে, তার সঙ্গে এটার কিছুটা হলেও একটা বৈপরীত্য তৈরি করে ৷ কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার পথে রাশিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ৷ সীমান্তের বিষয়ে জড়িয়ে পড়তে তারা রাজি নয় বলে রাশিয়া সম্প্রতি ভারত ও চিনের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ইঙ্গিত করেছে ৷ রাশিয়া দুই দেশের সঙ্গেই সমান সম্পর্ক রেখে চলতে চায় ৷ তারা ভারতকে অস্ত্র বিক্রি করা চালিয়ে যেতে চায় ৷ এতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্প চাঙ্গা হবে ৷ অন্যদিকে রাশিয়া ও চিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য নিজেদের স্বার্থে সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ৷ আমার মনে হয় ভারত-চিন সীমান্ত নিয়ে কিছু করার বিষয়ে রাশিয়া ঝুঁকি নেবে ৷ কারণ, এতে তাদের কোনও লাভ নেই ৷ ১৯৬২ সালের প্রেক্ষিতে একটা সমান্তরাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ তবে সেটা উল্টো দিকে ৷ ১৯৬২ সালে চিন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল যে ভারতের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন চিনকে সমর্থন করতে চায়নি ৷ রাশিয়া নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছিল ৷ তাই ইতিহাস অনুযায়ী দু’টো শক্তিধর দেশের সমস্যার মধ্যে রাশিয়ার ঢুকে পড়ার কোনও আগ্রহ নেই ৷ যেথানে দুই দেশের সঙ্গেই তাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে ৷

ভারতের তরফে রাশিয়াকে আরও অস্ত্রের বরাত দেওয়া কি DC-র জন্য ঈর্ষাজনক ?

প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সহযোগিতার সর্বোচ্চ সীমা, যা আপনি পেতে পারেন, সেখানে এর একটা প্রভাব পড়বে ৷ আমার মনে হয় না যে, চুক্তির ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা বজায় রাখতে DC-র কেউ চাইবে যে, ভারত রাশিয়ার সঙ্গে তাদের অস্ত্র চুক্তি ছেঁটে ফেলুক ৷ কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে এটা খুবই জটিল সম্পর্ক ৷03:52 PM 12-07-2020 আর যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়, তাহলে ভারতের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কতটা কাজ করতে রাজি হবে, তার উপর প্রভাব পড়বে ৷ ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সহযোহিতা অন্য জায়গাগুলিতে রয়েছে, যেখানে রাশিয়ার কোনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেই ৷ সেটা এয়ারক্রাফট সিস্টেমের পরিবহণ হোক কিংবা গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান ৷ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সম্পর্কের ব্যপ্তি বেশ বড় এবং এই ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে ৷ কিন্তু ভারত যদি তাদের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম আরও ভালো করার বিষয় ভয় পায়, তাহলে তখন রাশিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম নেই, যা তারা বিক্রি করতে পারে ৷ কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের বায়ুসীমা রক্ষা করার জন্য ভয় পেতে হয় না ৷ তাদের দেশের ভূপ্রাকৃতিক অবস্থানই এর কৃতিত্ব দাবি করতে পারে ৷ কারণ, দেশের দুই দিকে দু’টি মহাসাগর রয়েছে ৷ আর আমাদের উত্তর ও দক্ষিণ সীমান্তে তুলনামূলক অনেক ছোটো ছোটো দেশ রয়েছে ৷ তাই ওয়াশিংটন বিশ্লেষণ করে দেখেছে যে, রাশিয়ার থেকে অস্ত্র কিনলে ভারতের পক্ষে চিনের থেকে একটা পার্থক্য তৈরি করা সম্ভব হবে ৷ তাই অন্য ক্ষেত্রগুলিতে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ৷ কিন্তু এটাও উল্লেখ করতে হবে যে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এই মুহূর্তে নিজেদের খুঁজে পেয়েছে ৷

উপগ্রহ চিত্রের ভিত্তিতেও একটা লড়াই চলছে ৷ যার ক্ষেত্রে পরষ্পর বিরোধী ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে ৷ LAC-তে সেনাবাহিনী মোতায়েন এই ছবিগুলির ভিত্তিতে কতটা উদ্বেগজনক ? এবং এর সঙ্গে যোগ করুন, চিন ভারতের প্রতিবেশী অঞ্চলে সীমান্ত বিতর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে ৷ উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে চিন ভুটানের পূর্ব সেক্টরে সেটক্যাং স্যাংচুয়ারির দাবি জানিয়েছে ৷ যা থিম্পুকে খুবই অবাক করেছে ৷ তার এই দাবিকে খারিজ করে দিয়েছে ৷ আর এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছে ৷ ভারতেরও কি প্রস্তুত থাকা উচিত যে চিন আগামী দিনে এই ধরনের সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে ৷

এটা বোঝা যাচ্ছে যে এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে চিন ভারত ও ভুটানের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব তৈরি করতে চাইছে ৷ একটা বড় এলাকা দাবি করছে তারা, যা নিয়ে ১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে আলোচনা হয়েছিল ৷ ভুটান যাতে এগিয়ে যেতে পারে, সেই কারণে দাবি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল চিন ৷ আর ৯০-এ চিনের সঙ্গে একটা সীমান্ত চুক্তি চূড়ান্ত করেছিল ৷ তবে আরও বিস্তৃত কৌশলগত দিক থেকে ভারত কিন্তু এখন চিনের ভয়ের কারণ নয় ৷ এটা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৷ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কই চিনের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৷ কারণ, তাদের লক্ষ্যে পৌঁছনোর পথে এর একটা বড় প্রভাব রয়েছে ৷ ইতিহাস বলছে যে ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে ৷ কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে চুক্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে তারা যতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে, ততটা গুরুত্ব তারা ভারতকে দেয় না ৷ কিন্তু এর মানে হল চিন সীমান্তে নিজের অবস্থান সবসময় ধরে রাখে ৷ পশ্চিম সেক্টরে ভারত যাতে সাফল্য না পায়, তাতে বাধা দেয় ৷ ওই জায়গায় ভারত যাতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে না পারে, তার চেষ্টা করে ৷ কারণ, ওই ঐতিহাসিক স্পর্শকাতর এলাকা দিয়ে যাওয়া রাস্তার মাধ্যমে তিব্বত থেকে জিংজিয়াং ও চিনের বাকি অংশের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় ৷ তাই চিন তাদের খুব বেশি সংস্থান এখানে উৎসর্গ করতে চায় না এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে ব্যয় করে ভারতের সঙ্গে তারা সম্পর্ক তৈরি করতে আগ্রহী নয় ৷ বিদেশমন্ত্রী ওয়্যাং ই একটি দীর্ঘ বক্তৃতা করেছেন, সেখানে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে চিন তাদের কূটনৈতিক ও কৌশলগত লক্ষ্য আসলে কীসের উপর রাখতে চায় ৷ এর মানে ইতিমধ্যে আপনারা দেখেছেন যে, চিন ভুটানের দুইটি জায়গা নিয়ে ভারতকে উত্যক্ত করতে শুরু করেছে ৷ নেপালও হতে পারে ৷ আসলে চিন সীমান্তে তাদের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখতে চাইছে ৷ যাতে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিগুলিতে বেশি মনোনিবেশ করতে পারে ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details