পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

"শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত গোয়ার জন্য কাজ করব"

গোয়ার সেবায় শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ে যাব, বলেছিলেন মনোহর পর্রিকর

মনোহর পর্রিকর

By

Published : Mar 18, 2019, 9:30 AM IST

পানাজি, ১৮ মার্চ : নাকে নল। জীর্ণ শরীর। পাশে দু'জন চিকিৎসক। ব্রিজ পরিদর্শন করছিলেন মনোহর পর্রিকর। তা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছিল BJP। সে প্রসঙ্গে গোয়ার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, "শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত গোয়ার জন্য কাজ করে যাব।" কথাটা যে শুধুমাত্র বলার জন্য বলেননি তার প্রমাণ ফের দেন চারবারের মুখ্যমন্ত্রী। হাঁটতে পারছিলেন না। দুজন ধরে নিয়ে আসছিলেন তাঁকে। সেই অবস্থাতেই গোয়া বিধানসভায় বাজেট পেশ করেছিলেন মনোহর পর্রিকর।

১৯৫৫ সালের ১৩ ডিসেম্বরে গোয়ার মাপুসায় জন্ম হয় মনোহর পর্রিকরের। তাঁর ছেলেবেলা পার্রাতে কেটেছিল। স্কুলের পাঠ শেষ করে বম্বে IIT-তে ভরতি হন। ১৯৭৮ সালে মেটালজিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন। প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে প্রবেশের আগে RSS-র কার্যনির্বাহক ছিলেন। ১৯৯৪ সালে BJP-র টিকিটে বিধায়ক হন তিনি। IIT-র প্রাক্তনী হিসেবে দেশের মধ্যে প্রথম বিধায়ক। পাঁচ বছর পর গোয়া বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হন। ২০০০ সালের ২৪ অক্টোবর গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ২০১৪ সালের নভেম্বরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন পর্রিকর। ২০১৭ সালে ফের গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন পর্রিকর। মোট চারবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এক বছর পরই অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। বারবার চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হলেও তাতে আটকায়নি কাজের গতি। সেই অবস্থাতে ভঙ্গুর শরীরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন পর্রিকর। নাছোড়বান্দা মনোভাবের জন্য দেশজুড়ে তিনি প্রশংসিত হয়েছিলেন।

পুরো রাজনৈতিক জীবনে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রেখেছিলেন পর্রিকর। বরাবর সাধারণ জীবনযাপন করতেন। মন্ত্রিত্ব বা বিধায়ক হওয়ার কোনও বাহুল্য ছিল না। প্রায়শই ট্রেডমার্ক বুশ শার্ট পড়ে তাঁকে স্কুটার চালাতে দেখা যেত। যে কোনও প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতেন। তিনি হয়ে উঠেছিলেন সত্যিকারের আম-আদমির রাজনীতিবিদ। সারাদিন কাজে মেতে থাকতে ভালোবাসতেন। বিশেষত গোয়ার মানুষের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ধারণা হল, সেখানকার মানুষ শান্ত, উদ্বেগহীন জীবনযাপন করতে ভালোবাসেন। সেই সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা একজন কীভাবে এত কাজ প্রিয় হতে পারেন তা নিয়ে মনোহর পর্রিকরকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, "আমি ওরকম নই। দিনে ১৬-১৮ ঘণ্টা কাজ করি।"

আর এভাবেই সারাজীবন নিজেকে ধরে রেখেছিলেন মনোহর পর্রিকর। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাজ্যের জন্য কাজ করে গেছেন। নিজের কথার স্বার্থকতা পূরণ করেছিলেন তিনি। আর পেরেও ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক শূন্যস্থান তৈরি হল। তবে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেলেন। যা দেশের রাজনীতিতে বেঞ্চমার্ক হয়ে থাকবে।

ABOUT THE AUTHOR

...view details