এক সময় প্রাথমিক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিল জ্ঞানের বৃদ্ধি করা । কিন্তু এর মানে দাঁড়িয়েছে চাকরি নিশ্চিত করা । শিক্ষার ফলে কর্মসংস্থানকে তুচ্ছ করা হচ্ছে । সেই কারণেই জাতীয় শিক্ষানীতি 2020 (NEP 2020) কাজের ভিত্তিতে শিক্ষাকে আরও গুরুত্ব দিচ্ছে । গত দশকের বেশি সময় ধরে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলিই সবচেয়ে বেশি চাকরি দিতে পেরেছে । আসলে সারা বিশ্বেই ব্যবসা রাজত্ব করছে । অনলাইন ব্যবসা, ডিজিটাল মার্কেটিং, অনলাইন অ্যাকাউন্টিং (ট্যালি) কর ও আর্থিক প্রযুক্তি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে । উপরে উল্লেখিত ক্ষেত্রগুলোর মধ্যেই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে । আরও বেশি করে পড়ুয়ারা বাণিজ্য বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করছে । স্নাতক স্তরে যাঁরা পড়তে আসেন, তাঁদের 40 থেকে 50 শতাংশ BCom পড়ছেন । গত পাঁচ বছরে বিশেষজ্ঞ কর্মাস কলেজের সংখ্যা হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে । কিন্তু ভারতে পড়ুয়াদের ব্যবসা বা হিসাব সংক্রান্ত দক্ষতা অর্জন করার জন্য হাই স্কুলে বা ইন্টারমিডিয়েট স্কুলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় । যাঁরা ইন্টারমিডিয়েট স্তরে CEC নিয়ে পড়াশোনা করেন বা যাঁরা BCom এ স্নাতক হন, একমাত্র তাঁদেরই ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা থাকে । এর মানে হল, পড়ুয়ারা যতদিন না উচ্চ শিক্ষা শেষ করছে, ততদিন পর্যন্ত তাঁরা বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন না । এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া জরুরি । স্কুলে কমার্সের একেবারে গোড়ার বিষয়গুলো পাঠক্রমের মধ্যে রাখা উচিত ।
স্কুলে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত প্রত্যেক পড়ুয়াকে বাধ্যতামূলক ভাবে 6 টি বিষয় পড়ানো হয় । একমাত্র ইন্টারমিডিয়েট স্তরে পড়ুয়ারা নিজেদের পছন্দের বিষয় বেছে নিতে পারে । বর্তমানে স্কুলের যা পাঠক্রম, তাতে যারা MPC বা BiPC তে যোগদান করবে, তাঁদের জন্যই লাভজনক । যেহেতু কমার্স পাঠক্রমের অন্তর্গত নয়, তাই যারা CEC নেয়, তাঁদের জন্য এটা মোটেই লাভজনক নয় । NEP 2020 তে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে স্কুলের 10+2 ব্যবস্থাকে সরিয়ে নেওয়া হবে । ফলে স্কুলকে কমার্সকে বিষয় হিসেবে নবম শ্রেণি থেকেই রাখতে হবে । হিসাবশাস্ত্র ও কমার্সের বিষয়টি একেবারে স্কুল স্তর থেকে যেহেতু পড়ুয়ারা শিখতে পারবে, ফলে ডিগ্রি কোর্সে গিয়ে তাঁরা আরও জোর দিয়ে এটা পড়তে পারবে ।