পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

'ধস্তাধস্তি ছাড়া একা ব্যক্তির পক্ষে জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা অসম্ভব' - পুষ্পা গানেদিওয়ালা

একজন লোকের পক্ষে ধস্তাধস্তি ছাড়া কোনও মেয়েকে মুখ চেপে ধরে তাঁর ও নিজের জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা প্রায় অসম্ভব। এই যুক্তিতে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস করল বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। বিচারপতি সেই পুষ্পা গানেদিওয়ালা যিনি সম্প্রতি নানা বিতর্কিত রায় দিয়ে খবরের শিরোনামে এসেছেন।

Bombay High Court acquits man of rape, says impossible for a single man to gag victim, remove her clothes without scuffle
'ধস্তাধস্তি ছাড়া একা ব্যক্তির পক্ষে জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা অসম্ভব'

By

Published : Jan 29, 2021, 7:32 PM IST

দিল্লি, 29 জানুয়ারি: কোনওরকম ধস্তাধস্তি ছাড়া একা কোনও ব্যক্তির পক্ষে ধর্ষণ করা সম্ভব নয়। একজন লোকের পক্ষে কোনও মেয়েকে মুখ চেপে নিয়ে গিয়ে তাঁর ও নিজের জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা প্রায় অসম্ভব। এই যুক্তিতে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস করে দিল বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। বিচারপতি সেই পুষ্পা গানেদিওয়ালা। সম্প্রতি যাঁর একটি বিতর্কিত রায় নিয়ে দেশজুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সেই রায়কে স্থগিত করেছে।

ইয়াভাতমলে ধর্ষণে অভিযুক্ত 26 বছরের এক ব্যক্তির আবেদন মামলার শুনানিতে বম্বে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ বলেছে, ''কোনও মেয়ের কণ্ঠরোধ করে তাঁর ও নিজের জামাকাপড় খুলে কোনও ধস্তাধস্তি ছাড়া একা একজন মানুষের পক্ষে ধর্ষণ করা প্রায় অসম্ভব। মেডিক্যাল প্রমাণও এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারিণীর পক্ষে যাবে না।''

2013 সালের 26 জুন অভিযোগকারিণীর মা তাঁর প্রতিবেশী সুরজ কাসাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, তাঁর কন্যার যখন 15 বছর বয়স ছিল তখন তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। এই অভিযোগ পেয়ে এফআইআর দায়ের করে চার্জশিট দখিল করে পুলিশ। অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবীর দাবি ছিল, এই ঘটনা যখন ঘটে তখন মেয়েটির বয়স 18 বছরের বেশি ছিল এবং উভয়পক্ষের সম্মতিক্রমেই যৌন সম্পর্ক স্থাপন হয়েছিল। যদিও অভিযোগকারিণীর আইনজীবী জানান, লুকিয়ে মেয়েটির বাড়িতে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। সেই সময় মেয়েটির বয়স 15 ছিল বলেও দাবি করা হয়।

আরও পড়ুন :নাবালিকার যৌন হেনস্থা নিয়ে হাইকোর্টের 'ডিসটার্বিং' রায় স্থগিত শীর্ষ আদালতে

যদিও দু পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি গানেদিওয়ালা বলেন, নিগৃহীতার মেডিক্যাল রিপোর্ট বা অন্য কোনও প্রমাণে এটা স্পষ্ট নয় যে, ঘটনার সময় মেয়েটির বয়স 18 বছরের নীচে ছিল। বিচারপতির দাবি, ''এটা কি জোর করে যৌনসম্পর্ক স্থাপন ছিল? দু পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির কোনও প্রমাণ মেলেনি। মেডিক্যাল রিপোর্টে কোনও ধস্তাধস্তির চিহ্ন সামনে আসেনি।''

নিম্ন আদালতের দেওয়া 10 বছরের কারাদণ্ড খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি বলেন, ''কড়া শাস্তির জন্য কড়া প্রমাণও প্রয়োজন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের ক্ষেত্রে নিগৃহীতার একার জবানবন্দিই যথেষ্ট তাতে কোনও সন্দেহ নেই, তবে এই মামলায় অভিযোগকারিণীর দুর্বল জবানবন্দিতে অভিযুক্তকে 10 বছরের জন্য কারাগারে পাঠানোটা অবিচার হবে।''

আরও পড়ুন :ত্বকের সঙ্গে ত্বকের স্পর্শ না হলে যৌন নিপীড়ন নয় !

বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালাই বৃহস্পতিবার একটি রায় দিতে গিয়ে বলেছিলেন, কোনও নাবালিকার হাত ধরা বা প্যান্টের জিপ খোলার ঘটনাকে পকসো আইনে যৌন হেনস্থা হিসেবে ধরা যাবে না৷ ৷ 50 বছরের এক ব্যক্তির আবেদনের ভিত্তিতে গত 15 জানুয়ারি এই রায় দেয় বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চ৷

আরও পড়ুন:নাবালিকার হাত ধরা বা প্যান্টের জিপ খোলা যৌন হেনস্থা নয় : বম্বে হাইকোর্ট

কয়েকদিন আগেই নাগপুর বেঞ্চের এই বিচারপতি পুষ্পা গানেদিয়ালার একটি রায় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল৷ সেই মামলায় 39 বছরের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এক নাবালিকার স্তনে হাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল৷ ওই মামলায় বিচারপতি জানিয়েছিলেন যে ত্বকের সঙ্গে ত্বকের সংস্পর্শ না হলে বিষয়টি যৌন হেনস্থা হিসেবে ধরা যাবে না৷ এই নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়৷ সুপ্রিম কোর্ট ওই রায়ের উপর বুধবার স্থগিতাদেশ দিয়েছে৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details