পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

উপসর্গ না থাকলে 17 দিন পরই কাজে ফিরতে পারবেন কোরোনা আক্রান্তরা

কোরোনা নিয়ে চারপাশে যে আশঙ্কার পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা দূর করতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ(ICMR) একটি নির্দেশিকা জারি করেছে ৷ সেখানে বলা হয়েছে, মৃদু উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতে থাকাই শ্রেয় ৷

ছবি
ছবি

By

Published : Jul 22, 2020, 7:29 AM IST

হায়দরাবাদ : কোরোনার জন্য ফের পরীক্ষার প্রয়োজন নেই । ICMR ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে ।

কাপড়ের দোকানে কর্মরত বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি কোরোনায় আক্রান্ত হন । কিন্তু তাঁর কোনও উপসর্গ ছিল না । এটাও জানা যায়নি কার থেকে তিনি সংক্রমিত হয়েছিলেন । অন্যদের সঙ্গে স্থানীয় একটি হাসপাতালে তাঁর পরীক্ষা হয়েছিল । বাড়িতেই তিনি আইসোলেশনে ছিলেন । স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে যে ওষুধ দিয়েছিলেন তাই খেয়েছেন । যদিও প্রথমদিকে তাঁর সামান্য জ্বর ও কাশি হচ্ছিল, কিন্তু সাতদিনের মধ্যে উপসর্গ কমতে শুরু করে আর 17 দিনের মধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন । কিন্তু চার সপ্তাহ পরও দোকান মালিক তাঁকে কাজে যোগ দিতে দেয়নি । যেহেতু একমাস ওই ব্যক্তি কাজ করেননি তাই তাঁর বেতনও আটকে দেওয়া হয় । তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে তাঁর পরিবারে আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে ।

কোরোনায় আক্রান্ত হন একজন পরিচারিকাও (32) । যে অ্যাপার্টমেন্টে তিনি কাজ করতেন সেখানকার সব বাসিন্দাদের কোরোনা পরীক্ষা হয় । নিয়ম মেনে তাঁরও পরীক্ষা হয় এবং পজ়িটিভ ধরা পড়ে । তাঁর কোনও উপসর্গ ছিল না । যদিও GHMC কর্মীদের দেওয়া ওষুধ তিনি খান । উপসর্গ ছাড়াই দশদিন কাটে । কিন্তু অ্যাপার্টমেন্টে ফের কাজের জন্য ঢুকতে গেলে তাঁকে অনুমতি দেওয়া হয় না এবং জানিয়ে দেওয়া হয় আরও দু’সপ্তাহ তিনি সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন না । মহিলার স্বামী পেশায় অটোচালক । তাঁদের দুই সন্তান আছে । সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জেরে ওই ব্যক্তির কোনও কাজ নেই । এবার যেহেতু ওই মহিলাও কাজে যেতে পারছেন না তাই প্রবল অর্থকষ্ট পরিবারটির জন্য দমবন্ধ করা পরিস্থিতি তৈরি করেছে ।

কর্মচারী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক একে একে কোরোনা সবাইকে কাবু করে ফেলছে । যদি পরীক্ষায় পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে, আপনাকে সপ্তাহের পর সপ্তাহ কাজ ছাড়া থাকতে হবে । উপসর্গ ছাড়াই অনেকে এক মাসেরও বেশি সময় বাড়িতে কাটাচ্ছেন । এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বড় প্রভাব পড়ছে । সপ্তাহের পর সপ্তাহ কাজ না থাকায় অস্থায়ী শ্রমিক এবং দিনমজুরদের প্রবল দুর্দশার মধ্যে পড়তে হচ্ছে । অনেকেই একথা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন যে, তাঁরা কর্মচারীদের তখনই কাজে ফেরত নেবেন যখন তাঁরা কোরোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে পারবে । পরিস্থিতির চাপে পড়ে আক্রান্তদের জীবন কোণঠাসা হয়ে পড়ছে । কোরোনা নিয়ে চারপাশে যে আশঙ্কার পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা দূর করতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ ( ICMR)-এর নির্দেশিকা উদ্ধৃত করে প্রখ্যাত জেনেরাল ফিজ়িশিয়ান ডা. এম ভি রাও বলেছেন , একথা ইতিমধ্যেই স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে উপসর্গবিহীন কোরোনা আক্রান্তরা 17 দিন পর কাজে ফিরতে পারবেন এবং তারপর তাঁদের আর কোনও পরীক্ষার প্রয়োজন নেই ।

10+7 দিনের আইসোলেশনই যথেষ্ট–

85 শতাংশ কোরোনা পজ়িটিভদের সাধারণত কোনও উপসর্গ দেখা যায় না । কখন যে ভাইরাস তাঁদের শরীরে প্রবেশ করছে আর নির্দিষ্ট সময় পর নিজেরাই নির্মূল হয়ে যাচ্ছে তা তাঁরা জানতেও পারেন না ।

এই ধরনের পজ়িটিভদের বাড়িতেই আইসোলশনে রাখা ভালো ।

বাড়িতে যদি আলাদা শৌচাগার না থাকে তাহলে তাঁদের সরকারি আইসোলেশনে রাখা যেতে পারে ।

কোরোনা পজ়িটিভ ব্যক্তিদের আইসোলেশনে অন্তত 10 দিন থাকা উচিত । তারপর আরও সাতদিন তাঁদের নিজেদেরই নিজেদেরকে পরীক্ষা করতে হবে যে আদৌ তাঁদের জ্বর, কাশি, ঠান্ডা লাগা কিংবা ক্লান্তিবোধ হচ্ছে কি না ।

যদি 17 দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কোনও উপসর্গই না থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে যে তাঁরা কোরোনামুক্ত । এর অর্থ এই যে 17 দিন পর যে যার নিজের কাজে ফিরতে পারবেন ।

আর যাঁদের মৃদু উপসর্গ আছে তাঁদেরও বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা যেতে পারে । কিন্তু তাঁদের চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে ।

যাঁদের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে তাঁদের প্রথম 10 দিন পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে । যদি শেষ তিনদিনে জ্বর না আসে তাহলে বাকি সাতদিন তাঁরা বাড়িতে থাকতে পারেন ।

যদি শেষ 10 দিনে কোনও উপসর্গ দেখা না দেয় তাহলে পজ়িটিভ রিপোর্ট আসার 17 দিন পর তাঁরা কাজেও যেতে পারবেন ।

যদি এই সময় ফের উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে আগের মতো আইসোলেশন প্রক্রিয়া চলবে । কাজে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম লাগু হবে ।

যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে, ছাড়া পাওয়ার পর বাড়িতে তাঁদের অন্তত এক সপ্তাহ কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে । যদি উপসর্গ ফিরে না আসে তাহলে তাঁরা স্বাভাবিক কাজের রুটিনে ফিরতে পারেন । কিন্তু যদি উপসর্গ ফের দেখা দেয় তাহলে কাজে যোগ দেওয়ার আগে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে ফের চিকিৎসা করতে হবে এবং তাঁদের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেতে হবে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details