দিল্লি, 14 অগাস্ট : সোম থেকে শুক্র, সপ্তাহে পাঁচ দিনই অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে ৷ আজও রামলালার হয়ে সওয়াল করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট সিএস বৈদ্যনাথন ৷
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এই শুনানি চলছে । বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এসএ নাজ়িরও ৷ আজকের সওয়ালে বেশ কিছু ইউরোপীয় বইয়ের কথা উল্লেখ করেন বৈদ্যনাথন ৷ বলেন, অযোধ্যা শহরের বিবরণ রয়েছে বহু বইতে ৷ মন্দির ধ্বংস করে মসজিদ তৈরির কথাও নাকি রয়েছে তাতে ৷ বইয়ের লেখক যা শুনেছেন , তাই লিখেছেন এমনটাও বলেছেন তিনি ৷ ইউরোপীয় পর্যটকদের বইয়ে কী লেখা রয়েছে কে মন্দির ধ্বংস করেছিল, বাবর না ঔরঙ্গজেব? এই প্রশ্ন করেন সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্যতম সদস্য বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ৷
বৈদ্যনাথন বলেন, 1786 সালের আগে এটি ধ্বংস করা হয়েছিল, এটা নিশ্চিত ৷ কিন্তু কে ধ্বংস করেছিল, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ৷ বিচারপতি এসএ বোবদে বলেন, বাবরনামায় তা নিয়ে কিছু বলা হয়েছে কি না ৷ বৈদ্যনাথন বলেন, বাবর সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন এটা করতে ৷ বোবদে তখন প্রমাণ চান ৷ বৈদ্যনাথনের উত্তরের মাঝেই সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান বলেন, বাবরনামায় যে পাতাগুলির কথা বলা হচ্ছে, তা পাওয়া যায়নি ৷
1838 সালে মন্টগোমারির বইয়ের কথা টেনে বৈদ্যনাথন বলেন, কে মন্দির ধ্বংস করেছিলেন তা জরুরি নয়, জরুরি হল জন্মস্থানে অন্য একটি নির্মাণ গড়ে তোলা ৷ মসজিদের স্তম্ভগুলি আসলে অমুসলিম, কোনও মন্দিরের আদলেই তৈরি, কিংবা রামের প্রাসাদের থেকেই নেওয়া ৷ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির 1854 সালের দ্য গ্যাজেটর টেরিটরির নথির কথা বলেন বৈদ্যনাথন ৷ সেখানে লেখা ছিল, বিপুল ধ্বংসের কথা ৷ আলেকজ়ান্ডার ক্যানিংহামের আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টের কথাও বলেন তিনি ৷
তিনি বারবার বিদেশি বইয়ের প্রসঙ্গ টেনে মানুষের বিশ্বাসের কথা বলেন ৷ ''বিশ্বাসই প্রামাণ্য নথি'', এমনটাও বলেন বৈদ্যনাথন ৷ হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, ইসলামের উপস্থিতি ছিল ৷ মিলেমিশে ছিল ব্যাপারটা, বলেন চন্দ্রচূড় ৷ এসএ বোবদে এরপর অযোধ্যা নিয়ে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মত জানতে চান রাজীব ধাওয়ানের কাছে৷ ধাওয়ান এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করেন সুন্নিদের মত প্রসঙ্গে ৷
এর প্রেক্ষিতে বৈদ্যনাথন বলেন, ''আসলে জন্মস্থানের ধ্বংসাবশেষের উপর মসজিদ মানে শরিয়ত আইন অনুযায়ী, সেটি আসলে সঠিক অর্থে মসজিদ নয় ৷'' 2010 সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল অযোধ্যার বিতর্কিত জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রামলালা বিরাজমনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হোক । সে রায়ের বিরুদ্ধে 14টি আবেদন শীর্ষ আদালতে দাখিল করা হয় ।