গুয়াহাটি, 20 জুলাই : কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টির জেরে অসমের অধিকাংশ জেলাই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৷ বর্তমানে সেখানকার বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে ৷ ইতিমধ্যে ব্রহ্মপুত্র সহ বেশিরভাগ নদীর জল বিপদসীমার উপরে বইছে ৷ এদিকে কাছাড় জেলা দিয়ে প্রবাহিত বারাক নদীর জলস্তরও বেড়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে ৷
রাজ্য ও কেন্দ্রীয় জলসম্পদ দপ্তরের তরফে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৷ এখনও কাছাড় জেলায় নদীর জল বাড়ার জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি ৷ কিন্তু বৃষ্টি না কমলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে ৷
এই বিষয়ে জল সম্পদ বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, " মিজ়োরাম সহ অন্যান্য জায়গার জল ইতিমধ্যেই বারাকে প্রবেশ করতে শুরু করেছে ৷ এর জেরে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে এগোবে ৷ আমরা কেন্দ্রীয় জল কমিশনের সঙ্গে কাজ করছি ৷ এই মহামারি পরিস্থিতিতেও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি ৷ বারাকের জল বাড়লেও আমরা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত ৷"
গতকাল রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত বন্যায় প্রাণ হারিয়েছে 88 জন ৷ মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, কেশব মহন্ত এবং পীযূষ হাজারিকা সহ অন্য মন্ত্রীরা বন্যা বিধ্বস্ত মরিগাঁ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন । সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছেন তাঁরা ৷ ASDMA-র তথ্য অনুযায়ী, অসমে বন্যা কবলিত জেলাগুলি হল ধেমাজি, লখিমপুর, বিশ্বনাথ, শোণিতপুর, দারাং, বক্সা, নলবাড়ি, বরপেটা, চিরাং, বনগাইগাওঁ, কোকরাঝাড়, ধুবরি, দক্ষিণ সালমারা, গোয়ালপাড়া, কামরূপ, কামরূপ মেট্রোপলিটন, মরিগাওঁ, নাগাওঁ, গোলাঘাট, জোরহাট, মাজুলি, শিবসাগর, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া, করবি আংলং, চাচার ।
হোজাই ও পশ্চিম করবি আংলং জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে । বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধুবরি । সেখানে প্রায় 4.69 লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত । গোয়ালপাড়াতে সংখ্যাটি 4.49 লাখ । মরিগাওঁ এবং বরপেটায় 3.5 লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত । গত 24 ঘণ্টায় 511 জনকে উদ্ধার করা হয়েছে । প্রায় 2 হাজার 678টি গ্রাম জলের তলায় । 1 লাখ 16 হাজার 404 হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । 21টি জেলায় মোট 649টি ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে । 47 হাজার 465 জন এই ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে । তাদের চাল, ডাল সহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের তরফে ।