কঠিন বর্জ্য পদার্থ, যা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর, প্লাস্টিক বর্জে্যর সঙ্গে মিলে বছরের পর বছর বিপদের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে । কেবলমাত্র ব্রিটেন, যেখানে জনসংখ্যা সাত বিলিয়নের কম, হিসাব মতো, যদি কেউ প্রতিদিন একটি করে মাস্ক পরেন এবং ব্যবহারের পর দিনের শেষে ফেলে দেন, তাহলে গোটা বছরে অন্তত 66,000টন বর্জ্য জমা হবে । এই ছবিই বুঝিয়ে দেয়, COVID প্যানডেমিক বিশ্বকে কী নিদারুণ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে । জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনাল সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, দেশে COVID-এর জন্য দৈনিক 700 মেট্রিক টনেরও বেশি বায়োমেডিকেল বর্জ্য জমা হচ্ছে এবং রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, এই বর্জ্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশনে যথাযথ পদক্ষেপ যত দ্রুত সম্ভব নিতে হবে । তেলাঙ্গানা দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড পুলিশ বিভাগের কাছে আবেদন জানিয়েছে, COVID বর্জ্য বহনকারী যানবাহনকে যেন বাধা না দেওয়া হয় । তারা আরও সতর্ক করেছে যে, যদি এই বর্জ্য আগামী 48 ঘণ্টার মধে্য সরানো না হয়, তাহলে এই ভাইরাস বাতাসে বাহিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিপদ ডেকে আনার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে । কিন্তু বর্জ্য নিষ্কাশন নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস সত্ত্বেও বাস্তব সত্যটা এখনও ভয়ঙ্কর । দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা 84,000—এরও বেশি হাসপাতালের মধে্য যে সব হাসপাতালের নিজস্ব বর্জ্য নিষ্কাশন কারখানা রয়েছে, তার সংখ্যা 200—রও কম ।
হাসপাতাল ছাড়াও বহু রোগীর চিকিৎসা বর্তমানে বাড়িতেই, আইসোলেশনে হচ্ছে । তৃণমূল স্তরে যে খবর মিলেছে, তা অনুযায়ী মাস্ক, গ্লাভ, সিরিঞ্জ প্রভৃতি বাড়িতে যা ব্যবহার হচ্ছে, তা বাড়ির অন্যান্য সাধারণ বর্জ্য পদার্থের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে কারণ বেশিরভাগ বাড়িতেই আলাদা করে বর্জ্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই । যদি প্রতিষেধক এসে যায় এবং কোরোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়, সেক্ষেত্রে COVID সংক্রান্ত বর্জে্যর পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই কমে আসবে । কিন্তু তাতে আসল সমস্যার সমাধান হবে না । দেশে বর্তমানে বছরে 62 মিলিয়ন টন বর্জ্য সংগৃহীত হয়, যার মধে্য 45 মিলিয়টন টন বর্জ্য নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ফেলে দেওয়া যায় । কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে তাই যথোচিত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে এই ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের সমস্যা দূরীভূত করা যায়।