খসড়া গেজেটের মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে 27 টি বহুল প্রচলিত কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ভারত সরকারের কৃষি ও কল্যাণ মন্ত্রক । সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজেদের বক্তব্য রাখার জন্য কীটনাশক উৎপাদন সংস্থাগুলিকে 45 দিনের সময় দিয়েছে মন্ত্রক । ধান, সব্জি, ফল ও মশলাপাতি চাষে এই জেনেরিক কীটনাশকগুলি ভারতীয় কৃষকরা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেন । আর কেন্দ্রের মতে, এই কীটনাশকগুলি ব্যবহারের ফলে মানুষ ও প্রাণীদের ক্ষেত্রে ঝুঁকির সম্ভাবনা তৈরি হয় ।
সরকাররে বাতিল করা কীটনাশকগুলির তালিকায় রয়েছে মোনোক্রোটোফস, কুইনালফস, অক্সিফ্লুওরফেনের মতো জনপ্রিয় মলিকিউল । মোনোক্রোটোফস হচ্ছে অত্যন্ত বিষাক্ত একটি কীটনাশক যা কৃষকরা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেন । এই কীটনাশকের গায়ে একটি লাল লেবেল লাগানো থাকে, যার অর্থ এটি বিষাক্ত । মোনোক্রোটোফসের বিষক্রিয়ায় বহু কৃষক মারা গেছেন । পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণী, মাছ ও চিংড়িদের জন্যও এই কীটনাশক অত্যন্ত বিষাক্ত । স্থানীয় বাজারগুলিতে যে সব্জি মেলে তার বেশিরভাগের মধ্যেই মোনোক্রোটোফস পাওয়া যায় । এই কীটনাশকের নির্মাতারা এর বিষক্রিয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণ তথ্য সরকারকে দেননি । ধান, ভুট্টা, ডাল, আখ, তুলো, নারকেল, কফি বা ধনেপাতার ক্ষেত্রে কীটনাশক ছড়ানো এবং ফসল তোলার মধ্যে নির্ধারিত সময়সীমাও তারা স্পষ্ট করেনি । এইসব খামতির ফলে কৃষকরা কীটনাশক স্প্রে করার পরেই ফসল তুলে ফেলছেন । যার ফলে খাদ্যের মধ্যে রয়ে যাচ্ছে রাসায়নিকের অবশেষ । যাঁরা এই খাদ্য গ্রহণ করছেন তাঁরাও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন । 112 টি দেশ আগেই এই কীটনাশক নিষিদ্ধ করেছে ।
ভারতে প্রায়শই ব্যবহৃত আরেকটি কীটনাশক হল কুইনালফস । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিপজ্জনক তালিকায় এটিকে "মাঝামাঝি" বলে চিহ্নিত করা হয়েছে । একে হলুদ লেবেল (উচ্চমাত্রায় বিষাক্ত) কীটনাশকের তকমা দেওয়া হয়েছে । জোয়ার, লঙ্কা এবং তুলো চাষে একে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় । এটি 30 টি দেশে নিষিদ্ধ । ইউরোপীয় দেশগুলো একে ক্যাটেগরি ওয়ানের তালিকাভুক্ত করেছে । এই কীটনাশকের ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা যে তৈরি হয় তা প্রমাণিত । কুইনালফস নির্মাতারা এই কীটনাশকের কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশদে কিছু জানাননি । এটা সহজে বাজারে পাওয়া যায় বলেই ভারতীয় কৃষকরা ব্যবহার করেন ।