পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে খসড়া গেজেটের মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কেন্দ্রের

27 টি বহুল প্রচলিত কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ভারত সরকারের কৃষি ও কল্যাণ মন্ত্রক । সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজেদের বক্তব্য রাখার জন্য কীটনাশক উৎপাদন সংস্থাগুলিকে 45 দিনের সময় দিয়েছে মন্ত্রক ।

Pesticides
কীটনাশক

By

Published : May 27, 2020, 4:19 PM IST

খসড়া গেজেটের মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে 27 টি বহুল প্রচলিত কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ভারত সরকারের কৃষি ও কল্যাণ মন্ত্রক । সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজেদের বক্তব্য রাখার জন্য কীটনাশক উৎপাদন সংস্থাগুলিকে 45 দিনের সময় দিয়েছে মন্ত্রক । ধান, সব্জি, ফল ও মশলাপাতি চাষে এই জেনেরিক কীটনাশকগুলি ভারতীয় কৃষকরা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেন । আর কেন্দ্রের মতে, এই কীটনাশকগুলি ব্যবহারের ফলে মানুষ ও প্রাণীদের ক্ষেত্রে ঝুঁকির সম্ভাবনা তৈরি হয় ।

সরকাররে বাতিল করা কীটনাশকগুলির তালিকায় রয়েছে মোনোক্রোটোফস, কুইনালফস, অক্সিফ্লুওরফেনের মতো জনপ্রিয় মলিকিউল । মোনোক্রোটোফস হচ্ছে অত্যন্ত বিষাক্ত একটি কীটনাশক যা কৃষকরা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেন । এই কীটনাশকের গায়ে একটি লাল লেবেল লাগানো থাকে, যার অর্থ এটি বিষাক্ত । মোনোক্রোটোফসের বিষক্রিয়ায় বহু কৃষক মারা গেছেন । পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণী, মাছ ও চিংড়িদের জন্যও এই কীটনাশক অত্যন্ত বিষাক্ত । স্থানীয় বাজারগুলিতে যে সব্জি মেলে তার বেশিরভাগের মধ্যেই মোনোক্রোটোফস পাওয়া যায় । এই কীটনাশকের নির্মাতারা এর বিষক্রিয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণ তথ্য সরকারকে দেননি । ধান, ভুট্টা, ডাল, আখ, তুলো, নারকেল, কফি বা ধনেপাতার ক্ষেত্রে কীটনাশক ছড়ানো এবং ফসল তোলার মধ্যে নির্ধারিত সময়সীমাও তারা স্পষ্ট করেনি । এইসব খামতির ফলে কৃষকরা কীটনাশক স্প্রে করার পরেই ফসল তুলে ফেলছেন । যার ফলে খাদ্যের মধ্যে রয়ে যাচ্ছে রাসায়নিকের অবশেষ । যাঁরা এই খাদ্য গ্রহণ করছেন তাঁরাও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন । 112 টি দেশ আগেই এই কীটনাশক নিষিদ্ধ করেছে ।

ভারতে প্রায়শই ব্যবহৃত আরেকটি কীটনাশক হল কুইনালফস । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিপজ্জনক তালিকায় এটিকে "মাঝামাঝি" বলে চিহ্নিত করা হয়েছে । একে হলুদ লেবেল (উচ্চমাত্রায় বিষাক্ত) কীটনাশকের তকমা দেওয়া হয়েছে । জোয়ার, লঙ্কা এবং তুলো চাষে একে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় । এটি 30 টি দেশে নিষিদ্ধ । ইউরোপীয় দেশগুলো একে ক্যাটেগরি ওয়ানের তালিকাভুক্ত করেছে । এই কীটনাশকের ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা যে তৈরি হয় তা প্রমাণিত । কুইনালফস নির্মাতারা এই কীটনাশকের কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশদে কিছু জানাননি । এটা সহজে বাজারে পাওয়া যায় বলেই ভারতীয় কৃষকরা ব্যবহার করেন ।

অক্সিফ্লুওরফেন মাঝামাঝি বিষাক্ত আগাছানাশক বলে চিহ্নিত হলেও এটি ক্যানসার সৃষ্টিকারী । এটা শ্বাসের মধ্যে দিয়ে শরীরে গেলে অ্যানিমিয়া এবং যকৃতের ক্ষতি হতে পারে । নির্মাতারা ধান, বাদাম, পিঁয়াজ ও আলু চাষের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে কিছু জানাননি । এই আগাছানাশক পরিবেশ নষ্ট করার পাশাপাশি গাছপালা, মাছ ও চিংড়িদের মধ্যে কুপ্রভাব ফেলে ।

কেন্দ্র আরও 24 টি কীটনাশক এবং মানুষ ও প্রাণীদের শরীরে তাদের প্রভাব চিহ্নিত করেছে । এই বিল সংসদের দুই কক্ষে অনুমোদন পেলেই এইসব কীটনাশকের উৎপাদন, মজুত, পরিবহণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ হবে । একজন কৃষিবিদ ইনাডুকে জানান, কৃষকদের এইসব রাসায়নিকের ব্যবহার বন্ধ করা উচিত ।

সরকারের নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিকগুলি হল, পেন্ডিমেথালিন, সালফোসালফিউরান, থিওডিকার্ব, থিওফেনেট মিথাইল, থিরাম, জ়িনেব, জ়িরাম, মিথোমিল, ম্যানকোজ়েব, ম্যালাথিওন, ডিউরন, ডাইনোক্যাপ, ডাইমিথোয়েট, ডাইকোফল, ডেল্টামেথ্রিন, টু-ফোর ডি, ক্লোরোপাইরিফস, কার্বোফিউরান, কার্বেনডাজ়িম, ক্যাপটান, বিউটাক্লোর, বেনফিউরাকার্ব, অ্যাট্রাজ়িন এবং অ্যাসিফেট ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details