ভোপাল, 9 মে : মহারাষ্ট্রে মালগাড়ির ধাক্কায় 16 শ্রমিকের মৃত্যুতে দুই রাজ্যের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্র সরকারের মধ্যে সঠিক সমন্বয় না থাকায় ওই মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হতে হয়েছে শ্রমিকদের, এমন অভিযোগ করছেন বিরোধীরা । এদিকে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারগুলিতে । মৃত এক শ্রমিকের বাবা তাঁর দুই বছরের নাতির হাত ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন । কারণ ছোটো শিশুটি তার বাবার ফেরার অপেক্ষায় ।
মহারাষ্ট্রে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য পরিকল্পনা করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার । মোট 31টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে । যে ট্রেনে নিজ রাজ্যে ফিরতে পারবেন পরিযায়ী শ্রমিকরা । কারণ লকডাউনের কারণে বন্ধ যানবাহন পরিষেবা । যদিও শ্রমিকরা অনেকেই জানাচ্ছেন তাঁরা বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেনের পাস পাননি ।
মধ্যপ্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন । জালনার কারখানায় কাজ করতেন । লকডাউনের কারণে বাড়ি ফিরতে পারেননি । এইদিকে বন্ধ কাজও । খাবারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়েছেন বিগত দুইমাস । শুনেছিলেন , মধ্যপ্রদেশ সরকার বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে । কিন্তু পাসের জন্য আবেদন করেও সাড়া মেলেনি । কার্যত অসহায় হয়ে শেষে পরিবারের কাছে ফেরার জন্য রেললাইন ধরে হাঁটতে শুরু করেছিলেন ওই শ্রমিকরা ।
বৃহস্পতিবার সন্ধে 7টা নাগাদ জালনা থেকে হাঁটা শুরু করেন । প্রায় 36কিলোমিটার হেঁটে আসার পর ক্লান্ত হয়ে রেললাইনের উপর ঘুমিয়ে পড়েন । এক প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার বিষয়ে জানিয়েছেন, একটি মালগাড়ি হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে গেল । তারপর আবার চলতে শুরু করল । মালগাড়ি চলে যাওয়ার পর দেখলাম প্রায় 15-16জন শ্রমিকের মৃতদেহের অংশ পড়ে আছে । কারোর হাত, কারোর পা এইধার ওইধার ছিটিয়ে পড়ে আছে ।
শ্রমিকদের ওই দলেই ছিলেন বীরেন্দ্র সিং । যিনি প্রাণে বেঁচে যান । তিনি বলেন, “আমরা আমাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য পাসের আবেদন করেছিলাম । পাস পাওয়া তো দূর এমনকী আমরা আবেদনের কোনও সাড়াও পাইনি । ”