6 অগাস্ট । হিরোশিমার ভয়ঙ্কর ইতিহাসের 75 বছর । স্বস্তির বিষয়, 1945 সালের পর এখনও আর সেই ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী হয়ে ওঠেনি পৃথিবী । 75 বছর আগে সেদিন জাপানের প্রায় 1 লাখ 20 হাজার নিষ্পাপ প্রাণ শেষ হয়ে গেছিল । বহু প্রিয়জন চোখের সামনে হারিয়ে গেছিল । ঘর-বাড়ি সব ধ্বংস হয়ে গেছিল । যাঁরা বেঁচেছিলেন, তাঁদের কাছে সেই মাশরুম ক্লাউড (পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর আগুন ও ধোঁয়ার যে মাশরুম আকৃতির ঘন কালো মেঘ তৈরি হয়) আর তেজস্ক্রিয় মৃত্যপুরী যেন এক নির্মম সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল । যে সত্য বারবার বলছিল এর থেকে বোধহয় মৃত্যু শ্রেয় ছিল ।
সমগ্র বিশ্বের পারমাণবিক পরিস্থিতির যে রূপরেখা, তার পরিপ্রেক্ষিতে এইমুহূর্তে এটা ভাবা খুব কঠিন যে, এরকমই নিরবিচ্ছিন্নভাবে হিরোশিমার 80 তম বর্ষেও পৌঁছাতে পারবে পৃথিবী । সেই সূত্র ধরেই 3 অগাস্ট রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি রিপোর্টও জমা পড়েছে । নিঃসন্দেহে এই প্রতিবেদনের সত্যতা UNSC দ্বারা পরীক্ষা করা হবে । তবে তার আগের ফিরে দেখতে হবে ইতিহাসে । 1970 সাল । পারমাণবিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অ্যামেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল । এই চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল গ্লোবাল নিউক্লিয়ার ক্লাবগুলিকে সীমাবদ্ধ রাখা । এই NPT বা নিউক্লিয়ার নন-প্রোলিফারেশন ট্রেটির মধ্যে দিয়ে মূলত পরাজিত অক্ষ শক্তিগুলিকে (জার্মানি, জাপান এবং ইতালি) পারমাণবিক ক্ষমতা অর্জন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল । এই চুক্তিতে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল, তা হল প্রধান পাঁচটি দেশের সুরক্ষার স্বার্থেই পারমাণবিক শক্তিকে কুক্ষিগত করা হয়েছিল । কথা হয়েছিল, যে দেশগুলির পারমাণবিক শক্তির প্রয়োজন রয়েছে, তাদের সেই শক্তি সরবারাহ করবে ওই পাঁচ প্রতিনিধি দেশ । এরপর কেটে যায় বেশ কয়েক বছর । কিন্তু ছবিটা বদলায়নি । 1991 সালের ডিসেম্বরে রাশিয়া ভেঙে যায় । ঠান্ডাযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বের উত্থানের পরও পারমাণবিক অস্ত্রশক্তি পাঁচটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল । এগুলি হল অ্যামেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও চিন । 1974 সালে একটি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছিল ভারত । কিন্তু বিশ্বের প্রথম পাঁচ দেশের মধ্যে জায়গা পায়নি ।