কলকাতা, 26 নভেম্বর : সংবিধানের গুরুত্ব-গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে অভিযোগ উঠলেও বিষয়টির সঙ্গে আমি একমত নই । আমার স্পষ্ট অভিমত, দেশের প্রতিটি মানুষ (জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে) সংবিধানকে মান্যতা করেন । এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ অক্ষুণ্ণ রয়েছে ভারতের গণতন্ত্র । মানুষ ভোট দিতে যান । বিশ্বাস রাখেন । এটাই প্রমাণ করে সংবিধান-গণতন্ত্র পুরোপুরি মজবুত আছে । বহাল আছে এর গুরুত্ব, গ্রহণযোগ্যতা ।
তৃতীয় বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে অনেক পরিবর্তন এসেছে । দেশের অখণ্ডতা ভেঙেছে । সংবিধানের ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে । বাংলাদেশ, পাকিস্তানের সংবিধানের বেশ কয়েকবার পরিবর্তন এসেছে । কিন্তু আমাদের দেশের সংবিধানের সংশোধন হয়েছে রীতিনীতি মেনে । আমাদের মূল কাঠামো বজায় রয়েছে । একটি মুহূর্তের জন্য সংবিধানকে আমান্য করার ঘটনা ঘটেনি । অবজ্ঞা করা হয়নি । ভারতের মতো দেশে গণতন্ত্র অক্ষুণ্ণ থাকার এটাই সব থেকে বড় কারণ ।
সংবিধান এবং গণতন্ত্র যে অক্ষুণ্ণ আছে তার বড় উদাহরণ, আদালতের ভূমিকাকে আমরা কখনও অবমাননা করিনি । এর ফলে আজও সংবিধানের গুরুত্ব রয়েছে । অনেকে ভাবছেন ভাঙা হচ্ছে । কিন্তু মনে রাখতে হবে বিচার বিভাগের ভিত্তিতে সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে । যেমন মহারাষ্ট্রের সরকার গঠন । শনিবার সুপ্রিম কোর্ট বসেছিল । সুতরাং, সংবিধানের ভেতরে সমাধান পাওয়া যাচ্ছে । সংবিধানের বাইরে সমাধানের প্রয়োজন লাগছে না । এমন একটা পদ্ধতি রয়েছে যেটা কাজ করে যাচ্ছে ।
"এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ অক্ষুণ্ণ রয়েছে ভারতের গণতন্ত্র" সংবিধানে বলা হয়েছিল প্রথম 20 বছর সংরক্ষণ দেওয়া হবে । পরবর্তীকালে মনে হয়েছে পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর উন্নয়ন তেমন হয়নি । সেটা বাড়ানো প্রয়োজন । সাংবিধানিক প্রক্রিয়া মেনেই করা হয়েছিল । কিছু কিছু মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলেও পরিস্থিতি কোনও সময়ই হাতের বাইরে চলে যায়নি । এর ফলে, পিছিয়ে পড়া মানুষও বিশ্বাস করছেন সংবিধানের মধ্যে থেকে তাঁদের কিছু পাওয়ার রয়েছে ।
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের তুলনা করে বলা যায়, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এই ধরনের গণতান্ত্রিক কাঠামো কোথাও নেই । আফ্রিকার দেশগুলোতে মারামারি-সেনাশাসন চলছে । একমাত্র আমরাই সেনাশাসনের বাইরে দেশটিকে রেখেছি । বিচ্যুতি ঘটছে না তা নয়, অবশ্যই ঘটছে । তাও স্বীকার করতেই হবে, সংবিধানের প্রতি মানুষের আস্থা আজও অটুট রয়েছে ।