2রা অক্টোবর ৷ 1869 ৷ গুজরাতের পোরবন্দরে জন্মেছিলেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি ৷ সারা বিশ্বের কাছে যিনি মহাত্মা ৷ এ বছর সারা দেশে মহা সমারোহে পালিত হচ্ছে মহাত্মা গান্ধির সার্ধশতবর্ষ ৷ ETV ভারতও সামিল হয়েছে এই উদযাপনে ৷ গান্ধিজির প্রিয় ভজন 'বৈষ্ণব জন তো তেনে কহিয়ে, যে পীর পরায়ি জানে রে, পর দুখে উপকার করে তো ইয়ে, মান অভিমান না আনে রে' ৷ এই প্রিয় ভজনের মাধ্যমেই সারা দেশকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল ETV ভারতও ৷ সারা দেশের শিল্পীরা গলা মিলিয়েছেন সেই ভজনের সুরে ৷
ভারত এক সুবিশাল, বৈচিত্র্যের দেশ ৷ এই দেশ এবার এক হল পঞ্চদশ শতকে লেখা গুজরাতি কবি নরসিংহ মেহতার গানে৷ যে মানুষ প্রকৃত বৈষ্ণব, সে অন্য মানুষের অনুভূতি বুঝতে পারে, যন্ত্রণা বুঝতে পারে ৷ কোনও রকম গর্ব অনুভব করে না ৷ এই গীতি কবিতার ছত্রে ছত্রে ধরা পড়েছে এক বৈষ্ণবের আদর্শ ও জীবন ৷ যিনি অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল ৷ বিশ্বব্যাপী জীবনের কথা বলেছিলেন নরসিংহ মেহতা ৷ ভক্তি আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি ৷
মহাত্মা গান্ধি সেই সারল্য, সেই ভক্তি, নির্ভয় মন ও স্বচ্ছ মানসিকতাকে আপন করে নিয়েছিলেন নরসি ভগতের থেকে ৷ নরসি ভগত, গুজরাতের আদি কবি হিসেবে ধরা হয় যাঁকে৷ নরসিংহ মেহতা নামেও যিনি পরিচিত ৷ তাঁর লেখা এই ভজন জাত-ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেকের মনে এক অপার আনন্দের সঞ্চার করেছে ৷
গলা মিলিয়েছেন হৈমন্তী শুক্লা গুজরাতের সবরমতী আশ্রমেও নিয়মিত গাওয়া হয় এই ভজন ৷ নানা সময়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে ভজনের সুর ৷ অহিংসা ও সৌভ্রাতৃত্বের যে কথা মহাত্মা বলেছিলেন, সারা জীবন ধরে যে ধর্ম তিনি পালন করেছেন, সেই সুবাস রয়েছে এই ভজনটিতে৷
আরও পড়ুন : গান্ধিজির সার্ধশতবর্ষে ETV-ভারতের শ্রদ্ধার্ঘ্য
ETV ভারত বহুভাষী একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ৷ বিভিন্ন বর্ণ, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের মেলবন্ধন এই প্ল্যাটফর্ম, ভারতবাসীর মনে আশা জাগানো ETV ভারত ডিজিটালের মূল সুর কিন্তু বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই ৷ আপামর ভারতবাসীর মধ্যে যে মেলবন্ধন, দেশের প্রতি যে ভালোবাসা, পাশের মানুষের প্রতি যে অনুভূতি, 'বৈষ্ণব জন তো' ভজনটিতে ধরা পড়েছে সেই আবেগ ৷ আর সেই আবেগ একসুরে বেঁধেছেন দেশের নানা প্রান্তের প্রথিতযশা শিল্পীরা ৷ ETV ভারত-র বিশেষ এই উদ্যোগে সামিল হয়ে সারা দেশের শিল্পীরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মহাত্মাকে ৷ 'বৈষ্ণব জন তো'-র সুরে ৷
'বৈষ্ণব জন তো'-র সুরে সুর মেলালেন 12 শিল্পী বাংলার হৈমন্তী শুক্লা, তামিলনাড়ুর পি উন্নিকৃষ্ণন, তেলাঙ্গানার এস পি বালাসুব্রমনিয়ান, কন্নড় শিল্পী পি বিজয়প্রকাশ, গুজরাতের যোগেশ গাধভি, অসমিয়া শিল্পী পুলক ব্যানার্জি, মারাঠি শিল্পী বৈশালি মাড়ে, মালায়লম শিল্পী কে এস চিত্রা, পঞ্জাবের শংকর সাহনি, ওড়িশার সুভাষচন্দ্র দাস, হিন্দিভাষী শিল্পী চান্নুলাল মিশ্র, সালামত খান জাতির জনকের 150 বছরের জন্মদিনে একই সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন বাপুর প্রিয় ভজনের সুরে ৷ ভিডিয়োটিতে সারা দেশের সম্মিলিত ঐক্যতান যেন ফুটে উঠেছে ৷ গানটির আবহ সংগীত বসু রাও সালুরির, পরিচালনা করেছেন অজিত নাগ ৷ দেশের নানা প্রান্তে শুট করা হয়েছে ভিডিয়োটি ৷ দেশের প্রকৃত ঐক্যের যে মূল সুর, তা ফুটে উঠেছে ভিডিয়োটিতে ৷