বেঙ্গালুরু, 7 অক্টোবর: শান্তাকুমারী নামে এক বৃদ্ধার খুনের ঘটনা চমকে দিয়েছিল সারা বেঙ্গালুরুকে (Bengaluru) ৷ ছয় বছর পর অবশেষে সেই রহস্যের কিনারা করল পুলিশ ! ঘটনায় এক যুবক এবং তাঁর মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তাকুমারী খুন হওয়ার পরই নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয় ৷ ঘটনায় মোট তিনজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ওঠে ৷ একাধিক দল তৈরি করে অভিযুক্তদের পাকড়াও করার চেষ্টা শুরু হয় ৷ কিন্তু, মূল দুই অভিযুক্তের নাগাল কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ শুধুমাত্র তৃতীয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছিল তারা ৷
আরও পড়ুন:ভূস্বর্গের পুলিশকর্তা খুনে গ্রেফতার অভিযুক্ত পরিচারক, দায় স্বীকার জঙ্গি সংগঠনের
সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন কেঙ্গেরি থানার ইন্সপেক্টর বসন্ত ৷ বৃহস্পতিবার এই দলের সদস্যদের হাতেই ধরা পড়েন 46 বছরের শশীকলা এবং তাঁর 26 বছরের ছেলে সঞ্জয় ৷ তাঁদের মহারাষ্ট্রের কোলাপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় ৷ এরপর ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসা হয় বেঙ্গালুরু শহরে ৷ ধৃতরা নিহত বৃদ্ধার মেয়ে ও নাতি ৷
পাঁচ বছর আগে কেঙ্গেরি থানা এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে খুন হন 69 বছরের শান্তাকুমারী ৷ ওই একই বাড়িতে থাকতেন তাঁর মেয়ে শশীকলা এবং নাতি সঞ্জয় ৷ বহু বছর আগেই শশীকলার স্বামী মারা গিয়েছিলেন ৷ তাই তিনি ছেলেকে নিয়ে মায়ের সঙ্গে থাকতেন ৷ সেই সময় শশীকলার ছেলে একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়াংরিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন ৷ শশীকলা নিজে কোনও চাকরি বা ব্যবসা করতেন না ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছেন, সঞ্জয় বরাবরই পড়াশোনা ভালো ৷ দশম এবং দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষায় 90 শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছিলেন তিনি ৷
2016 সালের অগস্ট মাসে কলেজ থেকে ফেরার পথে দিদার জন্য বাইরে থেকে খাবার কিনে এনেছিলেন সঞ্জয় ৷ কিন্তু, শান্তাকুমারী সেই খাবার খাননি ৷ উপরন্তু, তিনি সেই খাবার নাতির মুখে ছুড়ে মারেন ! এতেই রেগে যান সঞ্জয় ৷ রান্নাঘরে রাখা একটি লাঠি নিয়ে এসে দিদার মাথায় মারতে শুরু করে তিনি ৷ তাতেই প্রাণ যায় বৃদ্ধার ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য মৃত্যু হয়েছে শান্তাকুমারীর ৷
এই ঘটনা জানার পরই পুলিশ খবর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শশীকলা ৷ কিন্তু, সঞ্জয় তাঁকে আটকে দেন এবং নন্দীশ নামে তাঁর এক বন্ধুকে বাড়িতে ডেকে পাঠান ৷ এরপর এই তিনজন মিলে বাড়িরই একটি আলমারিতে শান্তাকুমারীর দেহ লুকিয়ে রাখেন ৷ এরপর সেই বাড়িরই একটি দেওয়াল ভেঙে তার ভিতর বৃদ্ধার দেহ ঢুকিয়ে গাঁথনি তুলে প্লাস্টার করে দেন অভিযুক্তরা ৷ এবং এই ঘটনার পর কেঙ্গেরি থানা এলাকার এই ভাড়া বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান সঞ্জয় ও তাঁর মা ৷ এরপর 2017 সালের 7 মে বাড়ির মালিক বাড়ি সংস্কারের কাজে হাত লাগাতেই গোটা ঘটনা সামনে চলে আসে ৷