বালাসোর, 9 জুন: ভেঙে ফেলা হল 'অভিশপ্ত' বাহানাগা হাইস্কুল ৷ মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার সাতদিনের মাথায় এই স্কুল ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে ৷ কিন্তু কেন ভেঙে ফেলা হচ্ছে একটা গোটা স্কুল ? করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর এই বাহানাগা হাইস্কুলেই অস্থায়ী মর্গ বানানো হয়েছিল ৷ কয়েকঘণ্টার মধ্যে কার্যত মৃতদেহের স্তুপ হয়ে গিয়েছিল এই স্কুলে ৷ ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও গোল বাঁধে পড়ুয়াদের নিয়ে ৷ ওই স্কুলে যেতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চরম অনীহা দেখা দেয় ৷ আতঙ্কে কেউই যেতে চাইছে না স্কুল ৷ এমনকী অভিভাবকরাও পাঠাতে চাইছেন না ছেলেমেয়েদের ৷ তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই শেষ পর্যন্ত স্কুল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন ৷
বাহানাগা বাজার এলাকাতেই এক সপ্তাহ আগে এই দিনেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস ৷ প্রথমে লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ি এবং পরে ডাউন যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় করমণ্ডলের ৷ যার জেরে কার্যত দুমড়ে মুচড়ে যায় ট্রেনের অধিকাংশ বগি ৷ চারদিকে ছিটকে পড়েন যাত্রীরা ৷ সরকারি হিসাব অনুযয়ী 275 জনের মৃত্যু হয়েছে এই দুর্ঘটনায় ৷ এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রায় হাজার জন যাত্রী ৷ আর দুর্ঘটনার পরই বাহানাগা হাইস্কুলে রাখা হয় মৃত যাত্রীদের দেহ ৷ যার মধ্যে অনেক দেহই ছিল মুণ্ডহীন, বিকৃত ৷ বেশ কিছু দেহ এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল, যা এখনও পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি ৷ যদিও পরবর্তীকালে ভুবনেশ্বর এইমস-সহ একাধিক হাসপাতালে দেহ স্থানান্তরিত করা হয় স্কুল থেকে ৷ তাতে অবশ্য পরিবেশ পালটায়নি ৷ এলাকাবাসীরা পারতপক্ষে এড়িয়ে চলছে স্কুল চত্বর ৷ ছাত্রছাত্রীরাও আসতে রাজি নয় স্কুলে ৷ এরপর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির উপস্থিতিতে বাহানাগা হাইস্কুল ভবন ভাঙার কাজ শুরু করে প্রশাসন ।