প্রত্যেক বাবা-মা চান, তাঁদের সন্তানরা হাসিখুশিভাবে খেলতে খেলতে বড় হোক । কিন্তু তখনই তাঁরা, অথবা পরিবার বা স্কুলের কেউ লক্ষ্য করল যে বাচ্চাটা স্বাভাবিক আচরণ করছে না । বাড়ির ঠাকুমাও জানিয়ে দিলেন, “আমাদের পরিবারে কোনও বাচ্চা এমন আচরণ কোনওদিন করেনি ।” ব্যাস হঠাৎ করেই একদিন বাচ্চাটার গায়ে ‘অটিস্টিক’ বা ‘অটিজ়ম স্পেকট্রাম ডিজ়অর্ডার’-এ আক্রান্তের তকমা লেগে গেল ।
ইটিভি ভারত সুখীভব কথা বলেছিল ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট সম্রুদ্ধি পাটকরের সঙ্গে, যিনি অটিজ়ম আক্রান্ত শিশুদের থেরাপি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন । সম্রুদ্ধি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন মুম্বইয়ের বোরিভেলিতে ।
অটিজ়ম স্পেকট্রাম ডিজ়অর্ডার হল একটি স্নায়বিক অবস্থা, যাতে ভাবের আদানপ্রদান এবং অর্থপূর্ণ সামাজিক ভাব বিনিময়ের ক্ষমতায় প্রভাব পড়ে । যাদের অটিজ়ম স্পেকট্রাম রয়েছে, তাদের যৌথভাবে কিছু করার ক্ষেত্রে, কোনওকিছুর পুনরাবৃত্তি করতে, কল্পনা করার ক্ষেত্রে সমস্যা হয় । তাঁদের চিন্তাভাবনার নমনীয়তার ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে এবং তাঁদের ইন্দ্রিয়বোধ আমাদের থেকে আলাদা ।
‘স্পেকট্রাম’ শব্দটা যা ইঙ্গিত করছে, যে ব্যক্তি এইধরনের অবস্থার মধ্যে রয়েছেন, তাদের চাহিদা এবং দক্ষতাও আলাদা আলাদা হয় । যদিও কয়েকজন বাচ্চার মধ্যে সংখ্যা, সাহিত্য, ছবি আঁকা, গান-বাজনার বিশেষ দক্ষতা দেখা যায় ৷ কিন্তু অটিজ়ম থাকা সমস্ত শিশুর মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা থাকে না । কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকের মধ্যেই শেখার ক্ষমতা থাকে এবং শুরুতেই সঠিক সহায়তা পেলে তারা নিজস্ব ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলতে পারে ।
তাদের পূর্ণভাবে নিজেদের ক্ষমতাকে চিনতে শেখা এবং সঠিক পরিষেবা পেতে আগেভাগেই নির্ণয় হওয়াটা জরুরি । আঠেরো মাস বা তার থেকে কম বয়সেই একজন ডেভেলপমেন্টাল পেডিয়াট্রিশিয়ান বা একজন অভিজ্ঞ ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট অটিজ়মের বিপদ সঙ্কেত বুঝতে পারেন ।