উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ অজিত পাওয়ারের মুম্বই, 2 জুলাই:ফের দ্বিধাবিভক্ত এনসিপি ৷ শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ারের হাত ধরে বিজেপির পথে 40 এনসিপি বিধায়ক ৷ রবিবার বিকেলে মুম্বইয়ের উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথও গ্রহণ করে ফেললেন অজিত পাওয়ার ৷ যার জেরে মহারাষ্ট্রে আবারও কার্যত রাজনৈতিক ভূকম্প শুরু হয়ে গেল একপ্রস্থ ৷
এদিনই এনসিপি নেতা এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিরোধী দলনেতা অজিত পাওয়ার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৷ তাঁর সঙ্গে এনসিপির 30 জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বলেও দাবি করেছেন অজিত। অন্যদিকে, বিজেপিতে যোগ দিয়েই রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথও নিলেন অজিত পাওয়ার। বর্তমানে মহারাষ্ট্রে এনসিপি'র মোট বিধায়কের সংখ্য়া 54 জন ৷ যার মধ্যে 40 জন বিধায়কই এবার শিন্ডে সরকারকে সমর্থন করতে চলেছেন ৷ জানা গিয়েছে, এর মধ্যে 9 জন বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী হিসাবেও শপথ নেবেন। অজিত পাওয়ারের সঙ্গেই এদিন অমল মিতকারি, ছগন ভুজবল-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এনসিপি নেতা দল ছেড়েছেন ৷ উল্লেখযোগ্যভাবে, এদিন রাজ্যের মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে দেখা যায় প্রবীণ এনসিপি নেতা ছগন ভুজবলকেও।
রাজভবনে উপমুখ্যমন্ত্রী এবং বাকি মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান এদিনই সম্পন্ন হয়েছে বলে খবর ৷ অন্যদিকে, বর্তমানে রাজ্যের উপমুখ্য়মন্ত্রী পদে রয়েছেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ৷ সুতরাং অজিত পাওয়ার উপমুখ্যমন্ত্রী মনোনীত হলে রাজ্য সরকারে দু'জন উপমুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কি না, তা নিয়ে অবশ্য নয়া জল্পনা শুরু হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত যদিও বিজেপি বা শিন্ডে গ্রুপের তরফে দুই উপমুখ্যমন্ত্রী নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়নি ৷
আরও পড়ুন: কোনও কাট ছাড়াই 21 মিনিট শুট ক্যামেরা বন্দি, রেকর্ড ইটিভি'র ক্যামেরাম্যানের
কিন্তু রবিবারের বারবেলায় আচমকা কেন এই বিদ্রোহ অজিতের ? মুম্বইয়ের রাজনৈতিক মহলের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই কাকা-ভাইপোর মধ্যে দলের রাশ হাতে রাখা নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছিল ৷ যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ, দলের সভাপতি পদ থেকে নিজের ইস্তফা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন শরদ পাওয়ার ৷ যদিও সেটা যে শরদের সূক্ষ্ম রাজনৈতিক চাল ছিল, তা অবশ্য বুঝতে পেরেছিলেন বিচক্ষণ অজিত ৷ এবং শরদ ফের সমর্থকদের দোহাই দিয়ে দলের সভাপতি পদে ফের মনোনীত হওয়ার কথা ঘোষণা করার দিনও গরহাজির ছিলেন অজিত পাওয়ার ৷ এখানেই শেষ নয়, নাটক আরও জমে উঠেছিল, যখন শরদ পাওয়ার মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে এবং প্রফুল প্যাটেলকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করেন ৷ মনে করা হচ্ছে ভাইপো অজিতকে বাদ দিয়ে শরদের এই সিদ্ধান্তই কার্যত এনসিপি'র ভাঙনের শুরু ৷ আর এদিন দলের চূড়ান্ত ভাঙন ধরিয়ে কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দিলেন খোদ অজিত পাওয়ার ৷
ওয়াকিবহল মহলের ব্যাখ্যা, বছর ঘুরলেই দেশে লোকসভা ভোট ৷ তারও আগে বেশ কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটও রয়েছে ৷ যেভাবে বিজেপি বিরোধী জোটের ক্ষেত্রে শরদ পাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, এই ঘটনার পর তাও জোর ধাক্কা খেল ৷ বিজেপি প্রশ্ন তুলতে শুরু করছে, যেখানে নিজের দলের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে ব্যর্থ শরদ পাওয়ার, সেখানে বিজেপি বিরোধী সর্বভারতীয় জোটের অন্যতম মুখ হিসাবে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা আদৌ আছে কি না, তা নিয়ে ৷ পাশাপাশি আগামী দিনে এই বিরোধী জোটের আদৌ ভবিষ্যৎ কী তা নিয়েও একরকম প্রশ্ন উঠে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷