গুয়াহাটি, 23 মে: রাজ্য থেকে আফস্পা সম্পূর্ণ রূপে তুলে নেবে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷ বিতর্কিত আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ারস অ্যাক্ট, 1958 বা আফস্পার অস্তিত্ব থাকবে না উত্তর-পূর্বের অসমে ৷ এ বছর এপ্রিল মাসে অসমের 23টি জেলা থেকে, নাগাল্যান্ড এবং মণিপুরের বেশ কিছু জায়গা থেকে এই আফস্পা তুলে নেয় বিজেপি সরকার ৷ তবে অসমের 8টি জেলায় এই আইন এখনও বলবৎ রয়েছে ৷ উত্তর-পূর্ব ছাড়া জম্মু-কাশ্মীরেও আফস্পা লাগু রয়েছে ৷
এদিন ডেরগাওঁয়ে একটি সম্মেলনে হিমন্ত বলেন, "2023 সালের শেষে অসম থেকে সম্পূর্ণ রূপে আফস্পা তুলে নেওয়া হবে ৷ আমরা সেই চিন্তাভাবনা করছি ৷" 1958 সালে উত্তর-পূর্বে অস্থির অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে এই আইন আনা হয়েছিল ৷ 1990 সাল থেকে অসমে তা কার্যকর করা হয় ৷ সে সময় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন উলফা রাজ্যে হিংসাত্মক কাজকর্ম করছিল ৷ তা রুখতেই কড়া পদক্ষেপ করে কেন্দ্র ৷
শুধু অসম নয়, উত্তর-পূর্বের বাকি রাজ্যগুলিতেও এই আফস্পা লাগু করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল ৷ কারণ, এই আইনে নিরাপত্তাবাহিনী কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই যে কোনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারে ৷ আর তা শুধুমাত্র সন্দেহের বশেই ৷ এর জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতির দরকার নেই ৷ এমনকী আফস্পার আওতায় নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হলে তার জন্য নিরাপত্তাবাহিনীকে দায়ী করা হবে না ৷ তাদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপও করা হবে না ৷ তারা শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারে ৷
এই বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ 16 বছর ধরে অনশন করেন ইরম চানু শর্মিলা ৷ তিনি মণিপুরের আয়রন লেডি নামে পরিচিত ৷ 28 বছরের তরুণী শর্মিলা সমাজকর্মী 2000 সালের 5 নভেম্বর থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে অনশন শুরু করেন ৷ লাগাতার 500 সপ্তাহ তিনি কোনও খাবার, এমনকী জলও খেতে অস্বীকার করেন ৷ এই প্রতিবাদের ফলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁর ঠাঁই হয় সংশোধনাগারে ৷ তাঁকে জোরজবরদস্তি নল দিয়ে খাওয়ানো হত ৷ 2016 সালের 9 অগস্ট তিনি এই দীর্ঘ অনশন প্রত্যাহার করেন ৷ এর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান ৷
আরও পড়ুন: নাগাল্যান্ডে আরও ছ'মাস বহাল আফস্পা, সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের