নয়াদিল্লি,19 অগস্ট: কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে এ বার সম্মুখ সমরে নামল দিল্লির আম আদমি পার্টির (Aam Aadmi Party) সরকার ৷ ইতিমধ্য়েই রাজধানীর উপমুখ্যমন্ত্রী তথা অন্যতম আপ নেতা মণীশ সিসোদিয়ার (Manish Sisodia) বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI) ৷ তারই মধ্যে সামনে এসেছে নতুন বিতর্ক ৷ গত 16 অগস্ট আমেরিকার বিখ্যাত সংবাদপত্র 'নিউ ইয়র্ক টাইমস' (New York Times)-এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ৷ সেখানে দিল্লি সরকার এবং পৌর কর্তৃপক্ষের অধীনে থাকা স্কুলগুলির প্রশংসা করা হয়েছে ৷ প্রশংসা কুড়িয়েছেন মণীশও ৷ আর তাতেই ঘুম উড়েছে বিজেপি-র ৷ তাদের অভিযোগ, মোটা টাকার বিনিময়ে এই খবর ছাপিয়েছে আম আদমি পার্টি (Paid News Controversy) ৷ শুক্রবার গেরুয়া শিবিরের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে আপ (AAP) ৷ পাল্টা চ্যালেঞ্জের সুর শোনা গিয়েছে দলের অন্যতম নেতা সৌরভ ভরদ্বাজের (Saurabh Bharadwaj) গলায় ৷
এ দিন বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে সৌরভ বলেন, "আমি ওঁদের চ্যালেঞ্জ করছি ৷ আপনাদের কাছে যত টাকা আছে, আপনাদের কাছে যত ক্ষমতা আছে, সব ব্যবহার করুন ৷ আপনারাও নিউ ইয়র্ক টাইমসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেখান ৷" প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই বিজেপি-র একাধিক নেতা, নেত্রী মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরটি নিয়ে টুইট করেছেন ৷ তাঁদের সকলেরই দাবি, টাকার বিনিময়ে বিদেশের মাটিতে প্রচার পেতে চাইছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) সরকার ৷
আরও পড়ুন:Gandhi Statue Vandalised নিউইয়র্কে মন্দিরের বাইরে গান্ধি মূর্তি ভাঙল দুষ্কৃতীরা
বিজেপি-র যাঁরা এ নিয়ে টুইট করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি (Meenakshi Lekhi) ৷ তিনি লিখেছেন, "(কেজরিওয়াল) নিজেই স্বীকার করেছেন, 'নিউ ইয়র্ক টাইমস'-এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা সহজ কাজ নয় ৷ আর কত দিন আপনি জনগণের টাকায় নিজের বিজ্ঞাপন করবেন ? আপনি কি মুখ্যমন্ত্রী নাকি মুখ্য বিজ্ঞাপনদাতা ?"
প্রসঙ্গত, নিউ ইয়র্ক টাইমসে দিল্লির স্কুলগুলির খবর ছাপার পরই টুইটারে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে সেকথা জানিয়েছিলেন কেজরিওয়াল ৷ তাঁর অভিযোগ, যেহেতু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রে দিল্লি সরকারের মডেল অনুসরণ করছে, তাই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই মণীশ সিসোদিয়াকে হেনস্থা করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ৷ কেজরিওয়াল কার্যত দাবি করেন, মণীশ সিসোদিয়াকে বিশ্বের সেরা শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করা হয়েছে ! কেজরিওয়ালের কথায়, "সর্ববৃহৎ সংবাদপত্রে দিল্লির শিক্ষা বিপ্লব নিয়ে লেখা হয়েছে ৷ এবং সেই প্রতিবেদনে মণীশ সিসোদিয়ার ছবিও ছাপা হয়েছে ৷"
এই প্রসঙ্গেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল সকলকে মনে করিয়ে দেন, এর আগে শেষবার যখন নিউ ইয়র্ক টাইমসে ভারতের খবর প্রকাশ করা হয়েছিল, সেবার করোনায় ভারতীয়দের গণহারে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছিল ৷ এর কিছুক্ষণ পরই জবাব আসে বিজেপি-র তরফে ৷ দলের অন্যতম নেতা হরিশ খুরানা দাবি করেন, ওই একই প্রতিবেদন খালিজ টাইমস (Khaleej Times)-এও ছাপা হয়েছে ৷ টুইটারে হরিশ লেখেন, "একই ছবি, একই ভাষা ৷ কী অসাধারণ একজন বিজ্ঞাপনজীবী ৷"
অন্যদিকে, আপ-এর বক্তব্য, এই মিল খুবই স্বাভাবিক ৷ কারণ, নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটিই পরে খালিজ টাইমসে প্রকাশ করা হয় এবং সেখানে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে 'সূত্র' হিসাবে উল্লেখও করা হয় ৷ এই প্রসঙ্গে সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, "ওঁরা জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলেও মিথ্যা কথা বলেন ! নিউ ইয়র্ক টাইমসে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে এই প্রতিবেদনের কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের কর্মী করণদীপ সিংকে ৷ অন্যদিকে, খালিজ টাইমসে প্রতিবেদনের একেবারে নীচে লেখা হয়েছে, সূত্র- নিউ ইয়র্ক টাইমস ৷"