জয়পুর, 28 এপ্রিল : অক্সিজেনের অভাবে চারজন কোভিড রোগীর মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা জয়পুরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, রোগীর আত্মীয়ের অভিযোগ, হাসপাতালে অক্সিজেনের সিলিন্ডার পাল্টে দেওয়ার কেউ না থাকায় বেঘোরে প্রাণ হারান তাঁরা ৷ যদিও হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি ৷
বুধবার ঘটনাটি ঘটে রাজস্থানের জয়পুরে কালাবাড় পুলিশ স্টেশন এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ৷ জানা গিয়েছে, রাত 9টার সময় হঠাৎ অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ায় মৃত্যু হয় এই চারজনের ৷ যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে ৷ ওই চারজনের অবস্থা সংকটজনক ছিল, তাই তাঁরা মারা গিয়েছেন, জানায় হাসপাতাল ৷
এক রোগীর ভাইয়ের কথায়, "ভাইকে 22 এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ৷ 26 তারিখ অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল ৷ কিন্তু 27 তারিখ সকালে হাসাপাতালের কর্মীরা ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের দেখা করতে দেয়নি ৷ কারণ, ভাইয়ের পাশের বেডেই নাকি একজন মারা গিয়েছেন ৷ রাত প্রায় 9টা নাগাদ আমি ভাইকে জল দিই ৷ ওর অক্সিজেনের মাত্রাও তখন স্বাভাবিক ছিল ৷" তা হলে কেন মৃত্যু হল তাঁর ?
আরও পড়ুন: দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড, দেশে প্রথমবার একদিনে মৃত ৩ হাজারের বেশি
এর উত্তরে তিনি বলেন, "আমি রাতের খাবার আনতে নীচে নেমেছিলাম ৷ তার পরেই হঠাৎ একটা হইচইয়ের শব্দে সঙ্গে সঙ্গে ফিরে গেলাম ৷ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখি ভাই অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করছে ৷ আমি নার্সকে অক্সিজেন দেওয়ার কথা জানালাম ৷ এটা শুনে তিনি সিঁড়ি দিয়ে নীচে চলে যান আর তারপর পালিয়ে যান ৷"
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, দু'জন কোভিড রোগীর মৃত্যুতে ভয় পেয়ে হাসপাতালের কর্মীরা পালিয়ে যায় ৷ ফলে, যে রোগীদের অক্সিজেন ফুরিয়ে গিয়েছিল, তারা আর নতুন অক্সিজেন সিলিন্ডার পাননি ৷ তাতেই মারা যান বাকি দুই রোগীও ৷ সূত্র অনুযায়ী, 8 জন কোভিড রোগীকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ৷
প্রাইভেট হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চিকিৎসক বিজয় কাপুর ইটিভি-কে জানিয়েছে যে, তিনিও এই 4 জন রোগীর মৃত্যুর ঘটনার কথা জেনেছেন ৷ কিন্তু কী অবস্থায়, কেন তাঁরা মারা গেলেন, সেই তথ্য তাঁর জানা হয়নি ৷
কালাবাড় পুলিশ স্টেশনের স্টেশন হাউজ অফিসার বলেন, "হাসপাতালে অক্সিজের ছিল, কিন্তু সিলিন্ডারগুলো বদলে দেওয়ার কোনো স্টাফ ছিল না সেখানে ৷ মঙ্গলবার রাতেই চার জন কোভিড রোগী মারা যান ৷ তাদের পরিবারের সদস্যরা এরপর অভিযোগ করে যে কোনো কর্মী না থাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার পাল্টানো হয়নি, তার ফলেই মারা গিয়েছেন চার জন রোগী ৷"
পুলিশ জানিয়েছে, এই অভিযোগে রোগীর পরিবারের লোকজনেরা ভাঙচুর চালিয়েছে হাসপাতালে ৷