মুম্বই (মহারাষ্ট্র) 15 মে : করোনাভাইরাসের ধাক্কায় বিধ্বস্ত দেশ, এবার দোসর ‘মিউকোরমাইকোসিস’ বা ‘ব্ল্যাক ফাংগাস’ ৷ কোভিড সেরে গেলেও এই মারাত্মক ছত্রাকের সংক্রমণ রয়ে যাচ্ছে অনেক রোগীর শরীরেই ৷ এরই মধ্যে মহারাষ্ট্রে প্রায় 2000টি অ্যাকটিভ মিউকোরমাইকোসিস কেসের খবর পাওয়া গিয়েছে, মারা গিয়েছেন 10 জন ৷
কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জানিয়েছে এই সংক্রমণের ফলে কিছু রোগী তাঁদের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছে ৷ মানুষ কী করে সংক্রামিত হচ্ছেন, এর সঙ্গে কোভিডের সম্পর্ক কী, এর লক্ষণ, চিকিৎসা আর আগে থেকে কী সুরক্ষা নেওয়া সম্ভব, এই সব নিয়ে বিস্তারিত একটি নির্দেশিকা দিয়েছে এই মন্ত্রক ৷
কোনো ব্যক্তি কী ভাবে মিউকোরমাইকোসিসে সংক্রামিত হচ্ছেন ?
এটা এক ধরনের ফাংগাল ইনফেকশন বা ছত্রাক জাতীয় সংক্রমণ ৷ শরীরের কোনও ক্ষত, কাটা জায়গা, পুড়ে যাওয়া ক্ষতস্থান দিয়ে শরীরে ঢোকে এই ‘ব্ল্যাক ফাংগাস’ ৷ "ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ" (আইসিএমআর) জানিয়েছে, ডায়াবেটিসে ব্যবহৃত স্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায় ৷ এ ছাড়া কোনও জটিল রোগে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে থাকলে, কোনও অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হলে, ক্যানসার হলে এই সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায় ৷
এই ছত্রাক রয়েছে এমন পরিবেশে গেলে কোনও ব্যক্তি সহজেই সংক্রামিত হয়ে যান ৷ বিশেষত, কাদামাটি, পাতাময়, সার আর পচে যাওয়া জিনিসের মধ্যে এই ফাংগাস থাকে ৷ কোভিড রোগী আর ডায়াবেটিস রোগী, যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি ৷
মানুষ তার সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে এর মোকাবিলা করতে পারে সহজেই ৷ কিন্তু করোনা সংক্রমণের চিকিৎসায় রোগীকে এমন কিছু ওষুধ দেওয়া হয়, যাতে তার স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে এই ফাংগাল সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায় ৷ আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন রোগীরা ওই পরিবেশের আর্দ্রতার মাত্রার জন্য সুস্থ হওয়ার সময় এই ফাংগালে আক্রান্ত হন ৷
মিউকোরমাইকোসিসের লক্ষণ-
এই সংক্রমণের ফলে প্রথমে সাইনাস, পরে তা দাঁতে, আর তারও পরে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ এর পরের পর্যায়ে ফুসফুস আর মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ ছোট ছোট কালো দাগে ভরে যায় রোগীর মুখ, দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায়, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কাশতে গিয়ে রক্ত উঠে আসা, এই রোগের লক্ষণ ৷
যদিও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নিয়মিত ঠান্ডা লাগার সঙ্গে এই ফাংগাল ইনফেকশনকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না ৷ যে সব কোভিড রোগীদের চিকিৎসা চলছে অথবা যাঁরা সবে সুস্থ হয়েছেন, তাঁরা যেন এই লক্ষণগুলির বিষয়ে সচেতন থাকেন ৷ তবে, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ফল আর বিশেষজ্ঞের পরামর্শের পরই নিশ্চিত করা যাবে এই সংক্রমণ ৷
আরো পড়ুন : দিল্লিতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ব্য়াঙ্ক তৈরির ঘোষণা কেজরিওয়ালের
মিউকোরমাইকোসিসের চিকিৎসা-