হায়দরাবাদ, 12 মে: সংকটে সূর্যোদয়ের দেশ ৷ ক্রমশই হাস্র পাচ্ছে বিবাহের হার ৷ জাপানের তরুণ প্রজন্ম একটি নতুন সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে ৷ যেটি 'বুন্ধুত্ব বিবাহ' নামে পরিচিত ৷ নতুন এই সম্পর্কের কারণে জাপানের জনসংখ্যাও ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে ৷ যা দেশবাসীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ৷ একটি দেশের জন্য় চ্যালেঞ্জের ৷
সম্প্রতি, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট (এসসিএমপি)-এ একটি প্রতিবেদনের এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে ৷ সেই তথ্য অনুয়ায়ী, জাপানে বর্তমান প্রজন্ম বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হলেও, তাঁরা শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহী নয় ৷ তাই 'বুন্ধুত্ব বিবাহ' নামে বিশেষ সম্পর্কে আগ্রহী ৷ এই নতুন সম্পর্কে যেমন রোম্যান্টিকতা আছে ৷ তবে এই সম্পর্কে যৌন সম্পর্ক থাকে না ৷ পরিবর্তে সাহচর্য দু’জন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি পারস্পরিক শ্রদ্ধার দিকে বেশি গুরুত্ব দেন।
বন্ধুত্বের বিয়ে কীভাবে কাজ করে?
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট প্রতিবেদন অনুসারে, একটি 'বন্ধুত্বের বিয়ে' হল এমন এক ধরনের সম্পর্কের যেখানে দু‘জন ব্যক্তি একে অপরকে স্বামী ও স্ত্রী হিসাবে আইনি প্রতিশ্রুতি দেয়। একটি বন্ধুত্বের বিয়েতে, দুটি মানুষ একসঙ্গে বসবাস করেন, তবে সম্পূর্ণ নিজেদের শর্তে ৷ তাঁরা সম্পর্কে একসঙ্গে থাকলেও স্বাধীন । 'বন্ধুত্বের বিয়ে'তে দম্পতিরা কৃত্রিম গর্ভধারণ করতে পারেন ৷ তাঁরা এই পদ্ধতিতে বাবা-মা হতে পারেন।
বন্ধুত্বের বিয়ে কেন ?
বন্ধুত্বের বিয়ে অনেকটা পছন্দ মতো রুমমেট খুঁজে তাঁর সঙ্গে থাকার মতো একটা ব্যবস্থা ৷ বন্ধুত্বের বিয়েতে আবদ্ধ দম্পতিরা রোম্যান্টিকতার থেকেও, একে অপরের সাহচর্যকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছন ৷ সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে এমনই বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়েছে । সেখানেই এক মহিলা বলেন, "আমি কারও গার্লফ্রেন্ড হওয়ার জন্য উপযুক্ত নই ৷ কিন্তু আমি একজন ভালো বন্ধু হতে পারি ৷" এই পরিস্থিতিতে রোম্যান্সের প্রচলিত ধারণার পরিবর্তে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সামঞ্জস্যের উপর ভিত্তি করে সম্পর্ক গড়ে উঠছে ৷
বন্ধুত্বের বিয়ের প্রক্রিয়া?
বন্ধুত্বের বিয়ে শুরু করার প্রক্রিয়াটি একে অপরের প্রতি গভীর বোঝাপড়া ৷ সম্পর্কের গভীরতা তৈরি করতে একে অপরের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটানো যায় ৷ এই সম্পর্কে আবদ্ধ দম্পতিরা আর্থিক দায়বদ্ধতা, ঘরোয়া কাজ-সহ পরিবারের পরিচালনা একসঙ্গে করেন ৷ কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে তাঁরা একে- অপকে প্রাধান্য দেন ৷
বন্ধুত্বের বিয়েতে দম্পতিরা 'খুশি':
বন্ধুত্বের বিয়েতে দম্পতিরা 'খুশি' ৷ প্রথাগত রোম্যান্সের অভাব থাকা সত্ত্বেও, বন্ধুত্ব বিবাহে জড়িত প্রায় 80% দম্পতির সামগ্রিক সুখে আছেন বলে তাঁরা দাবি করেছন ৷ বন্ধুত্বের বিয়েতে থাকা একাধিক দম্পতির উপর সমীক্ষা করেছিল কালার্স নামে একটি সংস্থা, সেখানেই এই তথ্য উঠে এসেছে ৷ উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সম্পর্কে থাকা অনেক দম্পতি পারিবারিক আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য বন্ধুত্বের বিয়ে আছেন ৷
বন্ধুত্বের বিয়ের জন্য কে সবচেয়ে উপযুক্ত?
কালার্স-এর সমীক্ষা থেকে পাওয়া ধারণা অনুযায়ী, জনসংখ্যাগতভাবে বন্ধুত্বের বিয়ে প্রাথমিকভাবে 32.5 বছর বয়সের আশেপাশের ব্যক্তিদের কাছে আবেদন করে যার আয় জাতীয় গড় অতিক্রম করে। এই প্রবণতাটি অযৌন ব্যক্তি এবং LGBTQ+ সম্প্রদায়ের সদস্যদেরও অনুপ্রাণিত করে যা প্রচলিত বিবাহের নিয়মের বিকল্প ৷ এক প্রকার 'প্ল্যাটোনিক পার্টনার' (যে সম্পর্কে নেই যৌনতা) হয়ে তাঁরা থাকেন একে অপরের সঙ্গে ৷
আরও পড়ুন: